চাপ না রাখতে পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন, রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে ভর্ৎসনা আদালতের

‘চাপ রাখতে না পারলে ছেড়ে দিন, রাজ্যপাল নতুন কমিশনার নিয়োগ করবেন’। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ঠিক এই ভাষাতেই এবার খোদ রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে কড়া বার্তা দিতে দেখা গেল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমকে। প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ মামলা হয় হাইকোর্টে। বুধবার সেই মামলার শুনানিতেই প্রধান বিচারপতি কড়া ভাষায় বার্তা দেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে। তবে এদিনের ঘটনা থেকে এটা স্পষ্ট যে, পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে একের পর এক মামলায় আদালতের ভর্ৎসনার মুখে রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেওয়ার পর রাজ্য ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়। সেই অনুরোধ মেনে বাহিনী পাঠানোর কথা বিজ্ঞপ্তি দিয়েও জানানো হয়েছে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফ থেকে। এদিন মামলাকারীর তরফে আইনজীবী সৌম্য মজুমদার আদালতে প্রশ্ন তোলেন কমিশনের কার্যকারিতা নিয়ে। বলেন, ‘কমিশন কেন এভাবে চোখ বুজে থাকছে? মাত্র ১৭০০ জওয়ান চাওয়া হয়েছে। তারা ৬ জুলাই থেকে কাজ করবে।’ মামলাকারী এদিন এও মনে করিয়ে দেন, ২০১৩ সালে পাঁচ দফায় পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল, সেখানে ১৭টি জেলার জন্য ৮২ হাজার জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছিল।

মামলাকারীর আইনজীবীর  এই বক্তব্য শোনার পরই প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম কমিশনকে বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল গোটা নির্বাচন নিয়ে। শুধুমাত্র নির্বাচনের দিন নিয়ে নয়।’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘শুরু থেকে বোঝানোর চেষ্টা করছি আপনারা নিরপেক্ষ। আপনাদের অ্যাসেসমেন্ট করতে হবে। শেষ সিদ্ধান্ত আপনাদের নিতে হবে।’ এরপরই প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট ভাষায় জানান, ‘২২টি জেলার ভোটের জন্য ১৭০০ জওয়ান পর্যাপ্ত নয়।‘ সঙ্গে এও জানান, এই সংখ্যক জওয়ান দিয়ে কাজ চালাতে চাইলে একদিনে নির্বাচন সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে।

এদিন এই প্রসঙ্গেই প্রধান বিচারপতি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে এও জানতে চান, অন্য রাজ্য থেকে ভোটের মাত্র দুদিন আগে পুলিশ আসবে কেন তা নিয়ে। এরই রেশ ধরে প্রধান বিচারপতি রাজ্য কমিশনের উদ্দেশে এ প্রশ্নও ছুড়ে দিয়ে জানতে চান, ‘আমাদের কি কমিশনকে সন্দেহ করতে হবে?’

এরই পাশাপাশি কমিশনের পক্ষ থেকে কেউ আদালতে আসেন না বলে মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘খুব দুর্ভাগ্যজনক। তাঁরা কি এত ব্যস্ত! ছেড়ে দিন আমরা নিজেরাই নির্দেশ দিচ্ছি। কোনও রাজ্যের শান্তিপূর্ণ নির্বাচন, কমিশনেরই দায়িত্ব। সব শোনার পর এটা বুঝতে পারলাম আমাদের নির্দেশ কার্যকর হয়নি।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − six =