পুরসভার চেয়ারম্যানের সই জাল করার পাশাপাশি জাল করা হয়েছে সরকারি সিলও। আর এই সিল থেকে সই সব জাল করে পাশ হচ্ছে আবাসনের প্ল্যান। তারপর সেই প্ল্যানের ভিত্তিতে তৈরি হচ্ছে বেআইনি আবাসন। বিক্রি হচ্ছে ফ্ল্যাট। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পানিহাটিতে বি টি রোড লাগোয়া পানিহাটি পুরসভার আগরপাড়া নর্থ স্টেশন রোড এলাকায় এক প্রোমোটারের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, এ অভিযোগও উঠেছে যে জমির মালিকের সঙ্গে চুক্তিভঙ্গ করেছেন ওই প্রোমোটার। যদিও এই সব অভিযোগ মানতে নারাজ ওই প্রোমোটার। তবে অভিযোগ সামনে আসার পর এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পানিহাটি পুরসভা।
সূত্রের খবর, স্থানীয় বাসিন্দা উমা ধর। তাঁর বর্তমানে বয়স ৭৬। বারো বছর আগে বৃদ্ধার জমিতেই ফ্ল্যাট তৈরি হয়। এর জন্য ঊমা ধর এবং প্রোমোটার তাপস ভগতের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। উমা ধরের দাবি, ‘চুক্তি মতো তিনটি ফ্ল্যাট এবং সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা তাঁর পাওয়ার কথা। চুক্তির পর জি প্লাস ফোর আবাসন তৈরি হয়েছে। ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে। ইলেকট্রিকের কানেকশন ঢুকেছে। বসবাসও শুরু করে দিয়েছেন আবাসিকরা।’ অভিযোগ,’ চুক্তিমতো তিনটে ফ্ল্যাট পেলেও তার নথি হাতে পাননি বৃদ্ধা। সাড়ে ৭ লক্ষের বদলে ধরানো হয়েছে মাত্র দু’ লক্ষ টাকা।’
এর পাশাপাশি এ অভিযোগও উঠছে, ২০১২ সালে দু’পক্ষের চুক্তি হয়। অভিযোগ সেই চুক্তি মানেননি প্রোমোটার। বৃদ্ধার ছেলে এর পরেই পানিহাটি পুরসভার দ্বারস্থ হন। অভিযোগ, তাতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধর পরিবারের দাবি, পুরসভার তরফে চিঠির মাধ্যমে তাঁরা জানতে পারেন, ফ্ল্যাটের প্ল্যান পাসের জন্য পানিহাটি পুরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যানের সই জাল করা হয়। জাল করা হয় সরকারি সিলও। এ নিয়ে প্রোমোটারের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি পাল্টা হুমকি দেন। এদিকে পানিহাটি পুরসভার তৃণমূল পুরপ্রধান মলয় রায় জানান, ‘সই ট্যাম্পার করা হয়েছে। বিল্ডিং নকশা অনুমোদনের বিষয়ে পুরসভার কাছে কোনও রেকর্ড নেই। সব দিক খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ব্যবসায়ী তাপস ভগত। তাঁর দাবি, ‘যখন জমি মালিকের কাছ থেকে আমরা সব কাগজপত্র সংগ্রহ করেছিলাম তখন পুরসভার বিল্ডিং এর অনুমোদনপ্রাপ্ত নকশাও সঙ্গে ছিল।’ হুমকির বিষয়টিও অস্বীকার করেন তাপস ভগত। যদিও তাপস ভগতের দাবি মানতে নারাজ যৌথ উদ্যোগে তৈরি হওয়া আবাসনের অন্যতম জমির মালিক উমা ধরের দুই ছেলে জয়দীপ এবং সন্দীপ ধর।