তীব্র গরমে পুড়ছে জঙ্গলমহল। এরই মাঝে অত্যন্ত করুণ অবস্থা পচাখালি গ্রামের মানুষদের। কারণ, মাথা খুঁড়ে মরলেও সেখানে মেলে না পরিশুদ্ধ পানীয় জল। ফলে তৃষ্ণা মেটাতে ভরসা করতে হয় পচাখালি গ্রামের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের জলেই। আর এই পচাখালি গ্রামের ৮-১০ টি পরিবারের দৈনন্দিন কাজ নির্ভর করে এই খালের জলেই।
এদিকে ফি-বছর গরম পড়তেই তীব্র পানীয়জলের সংকট দেখা দেয় গ্রামে। টিউবওয়েল আছে। কিন্তু দীর্ঘকাল খারাপ হয়ে পড়ে থাকার পর তাতে যে জল মেলে তা পানের অযোগ্য। আর খালের জল পান করায় তা থেকে দেখা দিচ্ছে শারীরিক নানা সমস্যা।
পানীয় জলের পাশাপাশি বেহাল অবস্থা রাস্তারও। পচাখালি গ্রামে ঢোকার একমাত্র রাস্তাটি ঝাড়গ্রাম পুরসভার অন্তর্গত। ফলে রাস্তা কে করবে তাই নিয়েই দ্বন্দ্ব। নেই কোনও নিকাশি ব্যবস্থা। ফলে বর্ষায় এক হাঁটু জলের উপর দিয়েই যাতায়াত করতে বাধ্য হন।
এদিকে এখানকার মানুষ সরকারি পরিষেবা কি তাঁরা তা জানেনই না। অথচ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ভুরিভুরি আশ্বাসের কথা শুনিয়ে গেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। নির্বাচন শেষে সব কিছুই শূন্য। কারও দেখা নেই। ভোট আর দেবেন না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পচাখালি গ্রামের বাসিন্দারা। কারণ, সামগ্রিক ভাবে পচাখালিতে উন্নয়নের খাতায় বিরাট শূন্য ছাড়া আর কিছুই নেই। এমন এক ঘটনা বঙ্গের প্রশাসনের পক্ষে বড়ই লজ্জার মনে করছেন বঙ্গের সর্বস্তরের মানুষজন।
তবে এর জন্য ঠিক কারা দায়ী তা নিয়েই আকচা-আকচি চলছে দীর্ঘকাল ধরে। কারণ, পচাখালি গ্রামটি ঝাড়গ্রাম পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড ও রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাঝামাঝি অবস্থিত। তাই উন্নয়ন কে করবে, পুরসভা না পঞ্চায়েত তা নিয়েই দ্বন্দ্ব। স্থানীয়দের দাবি, বারবার পঞ্চায়েত অফিস, পুরসভা, প্রশাসনের কাছে দরবার করেও কোনও লাভ হয়নি। তবে পুরসভা বা পঞ্চায়েত গ্রামবাসীদের সুদিন ফেরানোর আশ্বাস দিয়েই চলেছেন। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। পচাখালি গ্রামের এই দুর্দশার কাহিনি কবে শেষ হয় এখন সেটাই দেখার।