পুজোর আবহে আরজি কর কাণ্ডে আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে চায় বামেরা

আরজিকর কাণ্ডে উত্তাল রাজ্য। এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের আরও ঝাঁঝ বাড়াতে চায় বামেরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে পুজোতেও পথে নামার পরিকল্পনা করেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। সিপিএমের পাশাপাশি অন্যান্য বামদলগুলিকেও একই বৃত্তে এনে লাগাতার কর্মসূচি করা হবে বলেও দলীয় সূত্রে খবর। সঙ্গে এ পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে যে, নাগরিক সমাজের নামে পতাকা ছাড়াই এই আন্দোলন হবে বলেই এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে। পুজোতেও রাজ্যজুড়ে ধারাবাহিক প্রতিবাদের মিটিং মিছিলের পরিকল্পনা বামেদের। এই পরিকল্পনার শুরু আগামী ১ অক্টোবর চিকিৎসকদের মিছিল দিয়ে। এরপর ২ তারিখ মহালয়ার ভোরের দখল নেওয়ার ডাকও দেওয়া হয়েছে কয়েকটি সংগঠনের তরফ থেকে। তবে গোটাটাই চলবে নাগরিক সমাজের নামে। সেই কর্মসূচিতেও বামেদের অংশগ্রহণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

নাম প্রকাশে অনিইচ্ছুক বামফ্রন্টের এক শরিক দলের নেতা এও জানান, ‘উৎসবে ফেরানোর নামে আরজি কর ইস্যু থেকে নজর ঘোরানোর পরিকল্পনা চলছে। পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে প্রতিবাদ জারি রাখা হবে। হয় শুনানি না হয় সুনামি। এমনটাই এখন জনগণনের মেজাজ।’

সূত্রের খবর অনুযায়ী, অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহেই একাধিক কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হয়েছে। ১ তারিখ চিকিৎসকদের ডাকা মিছিল রয়েছে। ২ তারিখ ভোরের দখল নেওয়ার ডাকও দেওয়া হয়েছে। ৩ তারিখও শহরে নাগরিক সমাজের নামে মিটিং মিছিল করা হবে। তবে, শুধুমাত্র শহর কলকাতাতে নয়, শহরতলিতেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে এই আন্দোলনের ঢেউ। ইতিমধ্যেই বারাসত থেকে আরজি পর্যন্ত মিছিল করা হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পক্ষ থেকে। এ ছাড়াও ৭ অক্টোবর প্যালেসটাইন সংহতি দিসব পালন করা বামেদের ব্যানারে।

সিপিএমের রাজ্য কমিটির এক সদস্য এই প্রসঙ্গে এও জানান, ‘কলকাতা পুলিশ কিংবা রাজ্য পুলিশ চাইছে মিটিং মিছিল আটকাতে। কিন্তু মানুষ নিজেদের দাবির কথা, অধিকারের কথা রাস্তায় নেমেই বলবেন। তা কেউ আটকাতে পারে না।’ এর পাশাপাশি তার সংযোজন, ‘আন্দোলন এর প্রকৃত অর্থ হল অবিরত। কোনও হুকুমদারি চলবে না। কোন ফর্মে হবে, কোন ফোরামে হবে সেগুলো মানুষ ঠিক করবেন। বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। মানুষ বলছে হয় শুনানি হবে না হলে সুনামি হবে। চিকিৎসক, নাগরিক সমাজ, মহিলা বৃন্দ, বামপন্থী সংগঠনগুলি, অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যে যেখানে পারছেন আন্দোলন করছেন। আন্দোলন করবেন। সকলে মিলে একটা সমবেত প্রয়াস চালানো হচ্ছে। খুব শীঘ্রই সেই পরিকল্পনা বা আন্দোলনের বিষয় ঘোষণা করা হবে। আমরা বামফ্রন্টের পক্ষ খুব শীঘ্রই আলোচনা করে সেগুলি ঘোষণা করবো।’

পুজোতে কোনও আন্দোলন চলবে কিনা প্রশ্নের জবাবে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানান, ‘বই পড়ুন, বই পড়ান, রাজনীতিতে সচেতন হোন৷শারদ উৎসবের সময় আমাদের বুকষ্টল হবে। তাকে ঘিরে নানান রকম পোস্টার ব্যানার নাটক সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিবাদ আন্দোলন সংঘটিত করা হবে। প্রগতিশীল সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চার প্রচার প্রসার হবে। আরজি করের নির্যাতিতার বিচার চাওয়া হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve + 7 =