বৌবাজারের ঘটনার তদন্তে ফরেনসিক দল, মিলেছে রক্তের নমুনা, ভাঙা ব্যাট

বৌবাজারের উদয়ন হস্টেলে মোবাইল চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় এবার তৎপর ফরেন্সিক দল। সোমবার ফরেনসিকের একটি দল উদয়ন হস্টেলে যায়। এরপর চলে সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহের পালা। ফরেনসিক দলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, মিলেছে রক্তের নমুনা, ভাঙা ব্যাট। এদিকে সূত্রে খবর, হস্টেলে কোথাও অসংলগ্ন কিছু চোখে পড়ে কি না, কোথাও রক্তের দাগ রয়েছে কি না, মারধরের অন্য কোনও চিহ্ন পাওয়া যায় কি না, তা দেখতে সোমবার গিয়েছিলেন ফরেন্সিক আধিকারিকেরা। তাঁরা হস্টেলের একতলা এবং দোতলায় তল্লাশি চালিয়েছেন। এর আগেও ওই হস্টেল থেকে একাধিক ব্যাট এবং লাঠি পেয়েছিল পুলিশ। যুবককে মারধরে তা ব্যবহার করা হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।  পাশাপাশি এও জানা যাচ্ছে, ধৃতদের হস্টেলে এনে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে বলে খবর পুলিশ সূত্রে। তবে পুনর্নির্মাণ কবে হবে, তা জানা যায়নি।

মুচিপাড়া থানা সূত্রে খবর, বৌবাজারের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে মুচিপাড়া থানার পুলিশ। ধৃতদের আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে থাকতে হবে। এই সময়ের মধ্যে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তদন্তকারীরা। ফলে ৪ তারিখের আগেই তাঁদের নিয়ে হস্টেলে যেতে হবে পুলিশকে। ঘটনার দিন যুবককে নিয়ে কোথা থেকে কারা কী ভাবে হস্টেলে ঢুকেছিলেন, ভিতরে তাঁকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, হস্টেলের দোতলায় কী হয়েছিল, পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে এই সব নিয়ে আরও স্পষ্ট ধারণা পাবেন তদন্তকারীরা।

গত শুক্রবার বৌবাজারের হস্টেলে ইরশাদ আলম নামের ৩৭ বছরের যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। তিনি বেলগাছিয়ার বাসিন্দা। চাঁদনি চক এলাকায় একটি মোবাইলের দোকানে কাজ করে সংসার চালাতেন। অভিযোগ, বৌবাজারে উদয়ন হস্টেলের সামনের রাস্তায় শুক্রবার সকালে তাঁকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছিল। সূত্রের খবর, আগের দিন ওই হস্টেলের এক জনের মোবাইল চুরি গিয়েছিল। ইরশাদকে দেখে ছাত্রদের সন্দেহ হয় এবং তাঁরা তাঁকে ফুটপাথ থেকে টেনেহিঁচড়ে ভিতরে নিয়ে যান। অভিযোগ, হস্টেলের ভিতরে তাঁকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে বৌবাজার থানার পুলিশ পৌঁছলে প্রথমে দরজা খোলা হয়নি। পরে সেখানে পৌঁছয় মুচিপাড়া থানার পুলিশ। তার পর দরজা খোলা হলে পুলিশ ইরশাদকে উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ‘হাইপোভলিউমিক শক’-এর কারণে মৃত্যু হয়েছে যুবকের। হৃদ্‌যন্ত্র-সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত বা ‘ফ্লুইড’ (তরল পদার্থ) না পৌঁছলে এই শারীরিক অবস্থা তৈরি হয়। মনে করা হচ্ছে, শরীরে একাধিক আঘাতের কারণে এ রকম হয়েছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 − five =