আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহে যে ধরনের এবং যত সংখ্যক আঘাতের চিহ্ন মিলেছে, তা কি এক জনের পক্ষে করা সম্ভব তা নিয়ে প্রথম থেকেই চলছে জল্পনা। শুধু কি সঞ্জয় একা না কি অন্য কেউ ঘটনার রাতে সঙ্গী ছিল তার এ নিয়ে জোর চর্চা সমাজের সর্বস্তরেই। আর এই তথ্য জানতে মরিয়া কলকাতা পুলিশও। সেদিন রাতে হাসপাতালের জরুরি বিল্ডিংয়ের সেমিনার রুমে ঠিক কী হয়েছিল সে ব্যাপারে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়ে কলকাতা পুলিশের দাবি, খুন-ধর্ষণের আগে মারধরে প্রবল বল প্রয়োগ করা হয়েছিল নির্যাতিতার উপর। তারই ইঙ্গিত মিলেছে ময়না তদন্তের রিপোর্টে। কোন আঘাত কীভাবে হয়েছে, তারই ইঙ্গিত রয়েছে রিপোর্টে। এমনকী নিজেকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়েছিলেন নির্যাতিতা। ধস্তাধস্তি হয়েছিল। বাধা দিতে চেয়েছিলেন নির্যাতিতা। তিনি যে বাধা দিয়েছিলেন তারও প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। অভিযুক্তর হাত ও মুখে আঁচড়ের ক্ষত দাগ মিলেছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানানো হয়েছে নির্যাতিতা তরুণীর কোথায় কী ভাবে ক্ষত হয়েছিল। চোখের ক্ষত ভাঙা চশমার কাচে ঘটেছে। সঞ্জয়ের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে প্রতিরোধ করেছিলেন ওই চিকিৎসক। প্রবল ধস্তাধস্তিতে চশমার কাচ ভেঙে যায়। কাচ ভেঙে ক্ষত এবং চোখ থেকে রক্ত বেরিয়ে পড়ে। মাথায় আঘাত রয়েছে। ধস্তাধস্তির সময় চিৎকার রুখতে নির্যাতিতার মুখ চেপে দেওয়ালে ঠুকে দেওয়া হয়েছিল।
মুখে আঁচড়ের ক্ষত রয়েছে। বল প্রয়োগ করে তরুণীর মুখ চেপে ধরা হয়েছিল। ছটফট করছিলেন তরুণী। সঞ্জয়ের প্রবল শক্তি দিয়ে বল প্রয়োগ করার জন্য তারই নখে তরুণীর মুখে ক্ষত হয়েছিল। শ্বাসরোধ করতে গলা টেপা হয়। ভেঙে যায় থাইরয়েড কার্টিলেজ। চিৎকার রুখতে মুখ ও গলা ক্রমাগত টিপে ধরা হয়েছিল। গলা টিপে শ্বাসরোধ করা হয়, শ্বাস আটকে গিয়ে মৃত্য়ু হয় চিকিৎসক তরুণীর। যৌনাঙ্গে গভীর ক্ষত মিলেছে। বিকৃত যৌন লালসা এবং মদ্যপ থাকার কারণে ক্রমাগত আঘাত হয়েছে। অন্যদিকে, অভিযুক্ত সঞ্জয়ের হাত ও মুখে আঁচড়ের ক্ষত রয়েছে। নির্যাতিতা নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাতেই তার নখের ক্ষত মিলেছে অভিযুক্তর শরীরে।