ভারতীয়রা কর দেয় ইংল্যান্ডের মতো, পরিষেবা পায় সোমালিয়ার মতো, সংসদে জানালেন রাঘব

ভারতীয়রা ইংল্যান্ডের মতো চড়া হারে কর দেয়। তবে পরিষেবা মেলে আফ্রিকার গরিব দেশ সোমালিয়ার মতো। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় এভাবেই ২০২৪-২৫ সালের বাজেট প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করতে দেখা গেল আপ সাংসদ রাঘব চাড্ডাকে। কর কাঠামোর ব্যাপক পর্যালোচনাও করতে হবে, এমনটাও জানান তিনি। তাঁর মতে, গত ১০ বছরে সরকার কর আরোপ করে দেশের সাধারণ মানুষের রক্ত ​​চুষে নিয়েছে।

কর প্রদান সম্পর্কে রাঘব চাড্ডা বলেন, ‘সরকার আমাদের কাছ থেকে যে এত কর নেয়, তার বিনিময়ে আমাদের কী দেয়? সরকার কি জনগণকে আন্তর্জাতিক মানের পরিষেবা, বিশ্বমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষা, পরিবহনের সুবিধা দেয়? এই কারণেই আজ আমার বলতে দ্বিধা নেই, আমরা ভারতে আজ সোমালিয়ার মতো পরিষেবা পেতে ইংল্যান্ডের মতো কর প্রদান করি।’

শুধু সমালোচনা করাই নয়, কর কাঠামোর সংশোধনে সরকারকে তিনি আটটি পরামর্শও দিয়েছেন কেন্দ্রকে। যার মধ্যে প্রথমেই রয়েছে, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ। এরই পাশাপাশি তিনি বলেন কেন্দ্রকে খোলা বাজারে কৃষকের ফসলের জন্য ন্যূনতম সংরক্ষিত মূল্য স্থির করতে হবে। একইসঙ্গে চাড্ডা এও জানান, স্বামীনাথন কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী এমএসপি-র আইনি গ্যারান্টি প্রয়োজন। এছাড়াও লং টার্ম ক্যাপিটাল গেইনের ইনডেক্সেশন পুনরুদ্ধার করা,ঋণ, ইক্যুইটি, মিউচুয়াল ফান্ড, ব্যাঙ্ক আমানত এবং আর্থিক বিনিয়োগে আর্থিক সঞ্চয়কে উৎসাহ দেওয়া, জিএসটি পর্যালোচনা, সংশোধন ও সরলীকরণ করা এবং রফতানিমুখী সেক্টরে জিএসটি কমানোর পাশাপাশি সব রাজ্যকে আরও বেশি সহায়তা প্রদানের কথাও বলেন আপ সাংসদ। সঙ্গে এও বলেন, রাজ্যগুলিকে আরও অন্তত পাঁচ বছরের জন্য জিএসটি ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত।

এখানেই শেষ নয়, এর পাশাপাশি রাঘব চাড্ডা আরও দাবি করেন, সমাজের সব অংশই এই বাজেট নিয়ে অসন্তুষ্ট। এমনকি, বিজেপির সমর্থকরাও খুশি নন। লোকসভায় বিজেপির আসন সংখ্যা কমার পিছনেও সরকারের অর্থনৈতিক নীতিগুলি দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন আপ সাংসদ। তিনি বলেন, ‘জনগণ বিজেপির আসন সংখ্যার উপর ১৮ শতাংশ জিএসটি আরোপ করেছে। এর অনেক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। কেউ বলছেন ধর্মের কার্ড কাজ করেনি, কেউ বলছেন জাতপাতের কারণ, আবার কেউ বলছেন টিকিট বণ্টনে ত্রুটি ছিল। এগুলো সবই অতি সাধারণ কারণ। আমি আপনাদের তিনটি কারণ বলছি। বিজেপির এই দুর্দশার প্রথম কারণ অর্থনীতি, দ্বিতীয় কারণও অর্থনীতি, এবং তৃতীয় কারণও অর্থনীতি।’

একইসঙ্গে মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, কম ফলন, আয়ের বৈষম্য, কৃষকের ঋণ ও খরচ বৃদ্ধি এবং কম আয়, ফসলের ক্ষতির কারণে গ্রামীণ আয় বাড়ছে না বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, সরকার কৃষকদের, স্বামীনাথন কমিশন অনুসারে এমএসপি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সঙ্গে ছিল আয় দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতিও। সেই প্রতিশ্রুতিগুলি পূরণ না হওয়ায় গত ২৫ মাস থেকে গ্রামীণ আয় ক্রমে কমছে। আর এর ফলেই গ্রামীণ ভারতে বিজেপির ভোট কমেছে বলে দাবি করেন রাঘব চাড্ডা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 5 =