কাজল সিনহা
কলকাতায় বিধান ভবনের বাইরে মল্লিকার্জুন খাড়্গের ছবিতে ‘কালি’। ছবির নিচে লেখা হয় ‘তৃণমূলের দালাল’। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর। তড়িঘড়ি সরিয়ে দেওয়া হয় পরপর তিনটি হোর্ডিং। মুছে ফেলা হয় কালিও। দুধ দিয়ে ধুয়ে দেওয়া হয় সেই হোর্ডিং।
সূত্রে খবর, বিধান ভবনের বাইরের দেওয়ালে কংগ্রেসের তিনটি হোর্ডিং লাগানো ছিল। সেখানে হাইকম্যান্ড তথা জাতীয কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের মুখে কালি লাগানো অবস্থায় দেখা যায় । শুধু তাই নয়, তার উপরে ‘টিএমস-র দালাল’ লিখেও দেওয়া ছিল।
প্রথমে বিধানভবনের নিরাপত্তারক্ষী কিংবা কর্মীরা কেউই বিষয়টি দেখতে পাননি। বেলার দিকে একজন দেখার পরই শোরগোল পড়ে যায়। কংগ্রেস কর্মীরা দ্রুত হোর্ডিংটাকে সরিয়ে ফেলেন। প্রথমে কালি মোছা হয়। তারপরও তাতে থেকে যায় দাগ। সেই দাগ দুধ দিয়ে ধুয়ে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়।
বস্তুত, ইন্ডিয়া জোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান নিয়েই সম্প্রতি জলঘোলা হতে থাকে। আর তার কেন্দ্রবিন্দুতে মমতা স্বয়ং। প্রথমে তিনি বলেছিলেন, ‘বাইরে থেকে সমর্থনের কথা’। তার ঠিক এক দিনের ব্যবধানেই মমতা প্রকাশ্য জনসভা থেকে ইন্ডিয়া জোটে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ‘ইন্ডিয়া জোট আমিই তৈরি করেছি। আমি জোটে থাকব। অল ইন্ডিয়া লেভেলে আমরা বিরোধী জোট ইন্ডিয়া তৈরি করেছিলাম। আমরা জোটে থাকব। অনেকে আমাকে ভুল বুঝেছে।’
কিন্তু এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন জানান , ‘এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমরা কোনওভাবে খাতির করতে পারব না। এ বাংলায় যে মহিলা আমাদের খতম করেছে, আমি সমর্থন করতে পারি না। এ বিষয়ে আমার কোনও দ্বৈত মত নেই। এই বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কংগ্রেসকে খতম করা হয়েছে। এখানে লড়াইটা আমাদের নৈতিকতার।’
এদিকে জোট প্রসঙ্গে অধীর যখন একথা বলছেন, তখন খাড়্গের বক্তব্য ছিল, ‘মমতা জোটে আছেন, এটা নিশ্চিত। আর অধীর চৌধুরী কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার কেউ নয়, সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কংগ্রেস দল আছে, হাইকমান্ড আছে। আমরা যা সিদ্ধান্ত নেব, সেটাই হবে। আমরা যা বলব, সেটাই মানতে হবে। কেউ যদি মানতে না পারে, তাহলে বেরিয়ে যেতে পারে।’ জোট নিয়ে মমতার অবস্থান নিয়ে দিল্লি নেতৃত্বের সঙ্গে বাকযুদ্ধের আবহে খাড়্গের মুখে কালি পড়ায় শোরগোল বঙ্গ রাজনীতিতে।