কাতারে মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে ৬টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করল ইরান। একজন ইজরায়েলি কর্মকর্তা এমনটাই দাবি করেছেন বলে জানানো হচ্ছে। এই হামলাকে আমেরিকার বিরুদ্ধে ইরানের প্রতিশোধ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। কারণ, ইরান ও আমেরিকার মধ্যে উত্তেজনা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে ইরানের পারমাণবিক ঘাঁটিতে মার্কিন বিমান হামলার পর।
এদিকে সূত্রে খবর, মধ্যপ্রাচ্যেও উত্তেজনা বাড়ছে এই ইরানের ওপর আমেরিকা ও ইজরায়েলের আক্রমণ ঘিরে। কারণ, একদিকে যেমন ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধের তীব্রতা ক্রমশ বাড়ছে ছিক তেমনই অন্যদিকে ইরান ও আমেরিকাও পরস্পর একে অপরের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য তৈরি। এদিকে সূত্রে এ খবরও মিলছে, ইরান কাতারে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ৬টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এর আগে রবিবার সকালেও আমেরিকা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল। অন্যদিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে ইরান মার্কিন ঘাঁটিতে সম্ভাব্য হামলার জন্য বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার মোতায়েন করেছে। একই সময়ে, রয়টার্স একজন কূটনীতিকের বক্তব্য তুলে ধরে জানিয়েছে,সোমবার বিকেল থেকে কাতারে আমেরিকার বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি আল–উদেইদ বিমানঘাঁটিতে হামলার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অ্যাক্সিওসের মতে ইরানও আমেরিকান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে, কাতারের রাজধানী দোহায় বিরাট বিস্ফোরণের এক শব্দ শোনা গিয়েছে বলেও সূত্রে খবর। ইরানের এই পদক্ষেপ অস্থিরতা ও উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে সোমবার ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যে তোমাকে আক্রমণ করবে, তাকেও একইভাবে আক্রমণ করো‘। এরপরই ইরানের বাহিনী কাতারে আমেরিকান আল–উদেইদ বিমানঘাঁটি ধ্বংস করে।আর এমনই এক প্রেক্ষিতে ইরানের পারমাণবিক ঘাঁটি এবং স্থাপনাগুলিতে আমেরিকার আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। শুধু তাই নয়, ইরানের তরফ থেকে জারি করা এই বিবৃতিতে এও বলা হয়েছে, ‘এই সফল অভিযানে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আমেরিকার নিক্ষেপ করা বোমার সংখ্যার সমান।‘ ইরান স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে ইরানি সেনাবাহিনী যে সামরিক ঘাঁটিকে লক্ষ্য স্থির করেছিল তা কাতারের শহরাঞ্চল এবং আবাসিক এলাকা থেকে অনেক দূরে। ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস অর্থাত্ আইআরজিসিও আমেরিকান সামরিক ঘাঁটিতে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে একটি বিবৃতি জারি করেছে।এরপরই কাতারে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস সেখানে উপস্থিত ভারতীয়দের জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে দূতাবাস জনগণকে সতর্ক থাকার এবং ঘরে থাকার জন্য অনুরোধ করেছে। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, যে কোনও গুজব এড়িয়ে চলার এবং কাতার সরকার কর্তৃক জারি করা স্থানীয় নির্দেশাবলী এবং সংবাদ অনুসরণ করারও। এর পাশাপাশি ভারতীয় দূতাবাসের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি সম্পর্কিত আপডেটগুলি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে শেয়ার করা হবে।