বিশ্বকাপের মাত্র পাঁচ ম্যাচে ইডেনে ফেলে দেওয়া চিপসের প্যাকেট, শীতল পানীয়ের বোতল সংগ্রহ করে যা ওজন হয়েছে তা ২৫টা পূর্ণবয়স্ক হাতির সমান। ৯০ হাজার ন’শো ৬ কেজি। তাও এর মধ্যে ফেলে দেওয়া খাবারকে ধরা হয়নি। শুধুমাত্র কঠিন বর্জ্যকেই ধরা হয়েছে।
‘ইউনাইটেড ওয়ে মুম্বই’ নামক একটি সংস্থার দায়িত্ব ছিল মাঠ পরিষ্কার করার। তাদের হয়ে ইডেন উদ্যানে কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ করেন ওই সংস্থার ২৩ স্বেচ্ছাসেবক। সেই বর্জ্য দিয়েই তারা তৈরি করেছে পাঁচশো জার্সি। ১০টি বসার বেঞ্চ। শনিবার কলকাতা পুরসভায় মেয়র ফিরহাদ হাকিমের হাতে তুলে দেওয়া হয় এই সব জ্যাকেট। আইসিসির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ওই সংস্থার। সংস্থার কর্মীরা জানিয়েছেন, আর্বজনা সংগ্রহ করে প্রথমে পৃথকীকরণ করতে হয়। জলের বোতল, প্লাস্টিকের প্লেট, চিপসের প্যাকেটগুলোকে আলাদা করা হয়েছে। রিসাইকেল পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছে জ্যাকেট, বসার চেয়ার। এই প্রসঙ্গে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, ফেলে দেওয়া বোতলকে রিসাইকেল করে জ্যাকেট বানানো হয়েছে। এই সমস্ত জ্যাকেট দেওয়া হবে পুরসভার ঝাড়ুদারদের। তৈরি করা হয়েছে ১০টি বেঞ্চও। সেগুলি বসানোর পরিকল্পনা করেছে পুরসভা। সৌন্দর্যায়নের কাজে তা লাগানো হবে।
এদিকে ‘ইউনাইটেড ওয়ে মুম্বই’-এর কলকাতার কোঅর্ডিনেটর তুলিকা ঠাকুরের জানান, ‘ফেলে দেওয়া চিপসের প্যাকেটের ঠাঁই হয় ময়লার বালতিতে। সকালে ময়লার গাড়ি সেগুলো তুলে নিয়ে গিয়ে ধাপায় ফেলে দেয়। এগুলো মাটিতে মেশে না। কিন্তু সেই চিপসের প্যাকেটগুলো যদি পাড়ার কাগজওয়ালাকে বিক্রি করা হয় তবে তা রিসাইকেল সাইটে পৌঁছয়। সেগুলো পুনরায় ব্যবহার করা যায়।’ ফেলে দেওয়া চিপসের প্যাকেট থেকে জামা তৈরির পরিকল্পনাকে সাধুবাদ জানান পরিবেশবিদরাও। জানান, এমন পদক্ষেপকে স্বাগত। ফেলে দেওয়া খাবারের প্লাস্টিকের প্যাকেটকে পুর্নব্যবহারযোগ্য করে তোলা অত্যন্ত জরুরি। আরও মানুষকে এই কাজে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি পরিবেশবিদরা এও জানান,, ফেলে দেওয়া জিনিস পুর্নব্যবহার যোগ্য করে তুলতে গেলে অর্থের প্রয়োজন। এহেন প্ল্যান্টগুলোকে বড় কোনও শিল্পসংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে। তাবেই আগামী দিনে আরও সাফল্য আসবে। ফেলে দেওয়া জিনিস থেকে শুধুমাত্র একবার পুর্নব্যবহারযোগ্য পণ্য তৈরি হল, এমনটা হলে চলবে না। ধারাবাহিকভাবে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিককে পুর্নব্যবহারযোগ্য করে তুলতে হবে।