তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ডেপুটেশন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত যাদবপুর

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ডেপুটেশন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান দফতর অরবিন্দ ভবনের সামনে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন একাধিক বাম ছাত্র সংগঠন ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য সমর্থকরা। তুমুল উত্তেজনা তৈরি হয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। তাদের ভিতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফ থেকে। এমনকী তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের সমর্থকদের মহিলা সদস্যদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। যদিও এসএফআই, এআইডিএসও-র মতো বাম সংগঠনগুলি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ডে ধরনা কর্মসূচি ছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের। সেখান থেকে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীদের একটি দল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অরবিন্দ ভবনে ডেপুটেশন জমা দেওয়ার উদ্দেশে যায়। সেই সময় সেখানে বাম ছাত্র সংগঠন গুলির ডাকে ‘জেনারেল বডি’ বা সাধারণ পরিষদের মিটিং চলছিল। দু’পক্ষের সমর্থকরা মুখোমুখি হতেই তাঁদের মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা ও পরবর্তী সময়ে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এই ঘটনাকে ঘিরেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের  কর্মীদের ভিতরে ঢুকেতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তোলা হয়। এমনকী একসময় ফ্লেক্স দিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীদের পথ আটকানোর চেষ্টা করা হয় বলে জানা গেছে।

এদিনের এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য জানান, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এখানে স্মারকলিপি জমা দিতে এসেছিলাম। কিন্তু বাম সংগঠন ও এসএফআই আমাদের বাধা দিয়েছে। এরাই মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে। আমাদের মেয়েদের হেনস্থা করা হয়েছে, শারীরিক নিগ্রহ করা হয়েছে। মেয়েদের গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে।’ এই প্রসঙ্গে তৃণাঙ্কুর এ প্রশ্নও তোলেন, ‘ক্যাম্পাসে মদ-গাঁজা খাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে বলে ভয় পেয়েই কী আমাদের আটকানো হচ্ছে?’ এদিনের এই ঘটনায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেত্রী রাজন্যা হালদার ক্ষোবের সঙ্গে জানান, ‘এঁরা মুখে বড় বড় কথা বলে। কিন্তু এখানে স্মারকলিপি জমা দিতে এসে আমাদের শুধু শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্থাই করা হয়নি, আমরা জামা ছিড়ে দেওয়া হয়েছে। এই শালীনতার কথা নিয়ে যাদবপুরের বাম-অতিবামরা প্রগতিশীলতার কথা বলে। আমি জানি না কেন এটা আামাদের বাধা দেওয়া হল। আমার ভাইয়ের মৃত্যু হল, ওঁরা চায় না দোষীরা বিচার পাক।’ অন্যদিকে এআইডিএসও এবং এসএফআই-এর তরফ থেকে পাল্টা অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

এখানে বলে রাখা শ্রেয়, যাদবপুরের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ। ঠিক কী কারণে মৃত্যু হল ওই পড়ুয়ার, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − seventeen =