অবশেষে পুলিশের জালে জামাল। শুক্রবার রাতে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স ও নরেন্দ্রপুর থানার বর্ডার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হল সোনারপুরের জামালউদ্দিন সর্দারকে। সূত্র মারফত খবর পেয়ে ওই এলাকায় আগে থেকেই ওঁত পেতে ছিলেন তদন্তকারীরা। জামালের সাগরেদ হিসাবে পরিচিত আরব, আলম, কুরবান ও সিরাজুলকে প্রথমে আটক করে সোনারপুর থানার পুলিশ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই জামালের কয়েকজন আত্মীয়ের ফোন ট্যাপ করে পুলিশ। কারণ, এঁদের যাঁদের সঙ্গে জামালের যোগাযোগের সম্ভাবনা ছিল অনেকটাই। সেখান থেকেই পুলিশ জামালের মোবাইল লোকেশন ‘ট্র্যাক’ করতে শুরু করে। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরের পর সেই মোবাইল ফোন ভাঙড়ের কাছে গিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। সূত্র মারফত খবর পেয়ে সোনারপুর থানার সীমানা এলাকা থেকে জামালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অন্যদিকে তদন্তকারীদের আশঙ্কা ছিল, জামাল পুলিশের হাতে ধরা না দিয়ে সরাসরি আদালতে গিয়ে জামিন নিতে পারেন। কারণ আইন কানুন নিয়ে বেশ হাত পাকিয়েছিলেন জামাল। পূর্বে একাধিক ঘটনায় জামাল প্রত্যাশার অনেক আগেই জামিন পেয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর। শনিবার বারুইপুর আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়া হবে বলে জানান বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি।
গত বুধবার জামালের বিরুদ্ধে নতুন একটি এফআইআর দায়ের হয়। সেখানেও হেনস্থা এবং তোলাবাজির অভিযোগ করেন এক মহিলা। অভিযোগ, টাকা দেওয়ার পরেও শিকল দিয়ে বেঁধে তাঁকে মারধর করা হয়েছিল। জামাল চেয়েছিলেন ২০ হাজার টাকা। শেষমেশ পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে স্বামীকে ছাড়িয়ে বাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই অভিযোগের তদন্তে নেমে জামাল সম্পর্কে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে পুলিশের হাতে। একের পর এক গ্রামবাসী তাঁর বিরুদ্ধে সালিশি সভা বসিয়ে হেনস্থা, তোলাবাজির অভিযোগ উঠতে থাকে। এরপর জামালের খোঁজ করতে গিয়েই তাঁর প্রাসাদের হদিশ মেলে। ৫০টি সিসি ক্যামেরার ঘেরাটোপে থাকা বাড়ির সুইমিং পুলে কচ্ছপ, মাঠে ঘোড়া, কী নেই সেই প্রাসাদে। এদিকে জামালের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তোলেন তাঁর নিজের দাদা, মাও। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই জামাল ছিলেন ফেরার।