গোষ্ঠী সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে বরাত জোরে প্রাণে বাঁচলেন নুহ জেলা আদালতের অতিরিক্ত প্রধান বিচারক এবং তাঁর তিন বছরের কন্যা। কোনও রকম মেয়েকে কোলে নিয়ে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন বিচারক, এমনটাই খবর হরিয়ানা প্রশাসন সূত্রে। হরিয়ানার নুহতে একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে ঘিরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা এখনও আয়ত্তে আসেনি। এরই মধ্যে এমন একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এল।
সূত্রে খবর, ঘটনার দিন মেয়েকে নিয়ে গাড়ি করে নুহ এলাকায় একটি হাসপাতালে গিয়েছিলেন জেলা আদালতের অতিরিক্ত প্রধান বিচারক অঞ্জলি জৈন। ফেরার সময় তাঁর গাড়িটি গোষ্ঠী সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায়। এরপর গাড়ি ঘিরে শুরু হয় ভাঙচুর। ছোঁড়া হয় পাথর। এই সময় কয়েকজন মিলে গাড়িটিতে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। এরপর আতঙ্কে মেয়েকে কোলে করে গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে বাঁচেন। দৌড়ে গিয়ে আশ্রয় নেন নিকটবর্তী একটি বাস ডিপোতে। সেখান থেকে ফোনে সমস্ত ঘটনা জানান সহকারী বিচারক ও আইনজীবীদের। এরপর তাঁরা এসে বিচারক অঞ্জলি জৈন ও তাঁর শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। ঘটনার পরদিন অ্রর্থাৎ মঙ্গলবার বিস্তারিত জানিয়ে নুর-এর একটি থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। ঘটনাস্থলে প্রায় ১০০ থেকে দেড়শোর জনের মতো হামলাকারী ছিল বলে এফআইআরে উল্লেখ করেছেন অতিরিক্ত প্রধান বিচারক।
এদিকে নুহ এলাকায় সোমবারের গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৪১টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এদিকে গোষ্ঠী সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে দুই হোম গার্ডের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্তাও। এফআইআরে দুই হোম গার্ডকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, তার সবিস্তারে বর্ণনা করা হয়েছে।
হরিয়ানায় গত সোমবার এই গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় শুধু নুহ নয়, আরও বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। গুজব বন্ধ করতে ইন্টারনেট পরিষেবার উপর জারি করা নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ গত ৫ অগাস্ট পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর জন্য মোদি সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর।