এজলাসেই জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার্থীর জালিয়াতি ধরলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

এজলাসে বসে নিজেই স্মার্টফোনে ‘কিউআর কোড’ স্ক্যান করে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার্থীর জালিয়াতি হাতেনাতে ধরলেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। আর এটি করতে নিজের ও আইনজীবীর মোট দুটি ফোন ব্যবহার করে ‘কিউআর কোড’ স্ক্যান করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়। আর এই ভাবেই আদতে ঠিক কীভাবে জালিয়াতি করা হয়েছিল, তা সম্যকভাবে বোঝেন বিচারপতি।

কিউআর কোড স্ক্যান করার পরই নজরে আসে, অভিযুক্ত জয়েন্টের ফল সংক্রান্ত নথি ডাউনলোড করে জাল করতে পেরেছেন ঠিকই, কিন্তু বোর্ডের কোড জাল করতে পারেননি। তাই সেই ‘কিউআর কোড’ যখন বিচারপতি নিজের ফোনে স্ক্যান করেন, তখনও বেরিয়ে যায় আসল তথ্য। এরপর বিচারপতির টানা প্রশ্নের মুখে পড়ে নিজের দোষ স্বীকারও করে নেন অভিযুক্ত। যদিও অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে কড়া কোনও পদক্ষেপের নির্দেশ দেননি বিচারপতি। তাঁর পর্যবেক্ষণ, অভিযুক্ত এখনও ছাত্র। তাই তাঁর ভবিষ্যতের কথা ভেবে বোর্ডকে তিনি কড়া পদক্ষেপ যাতে না করা হয়, তার পরামর্শ দেন।

মামলার প্রেক্ষাপট চলতি বছরের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ওই ছাত্র। তাঁর দাবি, ফলপ্রকাশের পর তিনি যখন প্রথম ওয়েবসাইটে নিজের র‌্যাঙ্ক দেখেন, তখন তাঁর জেনারেল মেরিট র‌্যাঙ্ক ছিল ১৬ এবং ফার্মেসি মেরিট র‌্যাঙ্ক ছিল ২৪১।

কিন্তু পরে তিনি আবার যখন নিজের র‌্যাঙ্ক দেখেন, তখন দেখা যায় তার জেনারেল মেরিট র‌্যাঙ্ক হয়েছে ১৪৩৯ এবং ফার্মেসি মেরিট র‌্যাঙ্ক হয়েছে ৩২৮৫। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হন ওই ছাত্র। সেই মামলায় অভিযোগ শুনে বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, এত বড় অভিযোগ, র‌্যাঙ্ক বদলে যাবে, তাহলে সিবিআইকে কেন তদন্তভার দেওয়া হবে না তা নিয়েই।  সেই সময়ই উত্তরপত্রে থাকা কিউআর কোড- এর প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের আইনজীবী। তখনই দেখা যায়, দ্বিতীয়বার যে র‌্যাঙ্ক পরীক্ষার্থী দেখেছেন সেটাই ঠিক। এরপর পরীক্ষার্থীকেই পাল্টা প্রশ্ন শুরু করতেই পরীক্ষার্থী স্বীকার করে নেন, তিনি র‌্যাঙ্ক সংক্রান্ত ডাউনলোডেড নথি জালিয়াতি করেছেন। এরপরই মামলা খারিজ করে দেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − 13 =