আইনজীবীদের হেনস্থার ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া বিচারপতি বসুর

সুপারনিউমেরারি পদে নিয়োগ মামলার পর আইনজীবীদের হেনস্থার ঘটনায় সোমবার কড়া প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা গেল হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুকে। প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের চেম্বারের বাইরে শুক্রবার বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ,সুপ্রিম কোর্টের সুপারনিউমেরারি পদ নিয়ে নির্দেশের পরেও উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগ মামলার কোনও অগ্রগতি হয়নি হাইকোর্টে। এখানেই শেষ নয়, এর পাশাপাশি বিচারপতির সঙ্গে বিকাশের ‘আঁতাঁতের’ কথাও তোলেন তাঁরা।
এরপরই এই ঘটনায়  সোমবার আইনজীবী ফিরদৌস শামীম, কল্লোল বসু এবং সুদীপ্ত দাশগুপ্ত ক্রিমিনাল কন্টেম্পট অর্থাৎ অপরাধমূলক মামলা দায়ের করার আবেদন করেন বিচারপতি বসুর এজলাসে। এই মামলারই প্রেক্ষিতে  বিচারপতি বসু  বলেন, ‘এমন ঘটনা একেবারেই সহ্য করা যায় না।’ যেহেতু প্রধান বিচারপতি বিষয়টা দেখছেন, সেই কারণে মঙ্গলবার ফের আবেদন করার নির্দেশ দেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।
এদিকে আদালত সূত্রে খবর, আইনজীবীরা জানান, ‘আমরা অন্তত দুজনকে চিনি, যাঁরা মামলাকারী। এই ধরনের ঘটনায় বার আতঙ্কিত। ১৪৪ ধারা ছিল।’ আর এখানেই আইনজীবীদের প্রশ্ন,’তাহলে কীভাবে সেখানে এরা জড়ো হল?’ এই মামলার শুনানিতে বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীদের এদিন সওয়াল করার সময় বলেন,’পুলিশ দর্শকের মতো দেখছিল। পুলিশ কমিশনারের রিপোর্ট তলব করুক। বিচার ব্যবস্থাকে বার বার টার্গেট করা হচ্ছে।’এরপরই আইনজীবীরা আদালতে প্রশ্ন তোলেন,’ওনারা চার ঘণ্টা ধরে ওখানে কী করছিলেন? বিচারপতির ছবি মারিয়ে দেওয়ার ঘটনা হয়েছে।’ আর এখানেই প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘যদি তাঁদের রায় পছন্দ না হয়, তাহলে আবেদন করা উচিৎ। এভাবে বিক্ষোভ দেখানো যায় না! এটা প্রাথমিকভাবে ভুল। তাঁদের চিহ্নিত করতে হবে। আমরা বিষয়টি গ্রহণ করছি।’
প্রসঙ্গত, শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষার বিষয়ে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি নিয়ে বেনিয়মের অভিযোগে মামলা গড়িয়েছিল হাইকোর্টে। ওই মামলায় শুক্রবার রাজ্যের স্পষ্ট বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর পর্যবেক্ষণ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো সিবিআই তদন্ত হচ্ছে না, ঠিক আছে। কিন্তু অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির যে সিদ্ধান্ত, সেটা কাদের জন্য তা  লিখিতভাবে রাজ্যকে কারণ জানাতে বলে আদালত। তারপরই ঝামেলার শুরু।
সেদিনের বিক্ষোভের ঘটনার তীব্র নিন্দা করে রাজ্য সরকারকে দোষারোপ করেন বিকাশরঞ্জন। তাঁর কথায়, আবার প্রমাণিত হয়েছে রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা নেই। তিনি আরও জানান,’যারা লড়াই করে আইন প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে শাসকদল দুর্নীতির পক্ষে যাঁরা আছেন তাঁদের লেলিয়ে দিচ্ছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × one =