টাকা হাতানোর অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপের নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

টাকা হাতানোর অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে। আর এই ব্যাপারে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এরই পাশাপাশি ওই আইনজীবীকে শোকজও করেন তিনি। সোমবার বিচারপতির নির্দেশ, ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখবে হাইকোর্টের অরিজিনাল সাইট। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে এফআইআর করতে হবে বলেও নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গ বার কাউন্সিলকেও বিষয়টি দেখতে বলেন তিনি। প্রসঙ্গত, সোনালি মুখোপাধ্যায় নামে এক মহিলার অভিযোগ, হাইকোর্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির সদস্য আইনজীবী স্বাগত দত্ত অসত্য বলে কয়েক হাজার টাকা নিয়েছেন। ওই মহিলা টাকা লেনদেনের স্ক্রিনশটও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখান। সেখানে দেখা যায়, দু’বারে প্রায় ১০ হাজার টাকা তাঁর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে।

এই অভিযোগ প্রসঙ্গে ওই আইনজীবীর কাছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানতে চান, ‘আপনি টাকা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। লিগ্যাল সার্ভিসেসের আইনজীবী হিসাবে আপনি কি টাকা দাবি করতে পারেন? আপনি কি টাকা নিয়েছিলেন?’  প্রত্যুত্তরে আইনজীবী জানান, এটা তিনি বলতে পারব না। সম্ভবত এই ঘটনাটি জানেন তাঁর ক্লার্ক। এরপরই  বিচারপতির প্রশ্ন,‘আপনার ক্লার্ক কি আপনার অনুমতি না থাকলে এ ভাবে চাপ দিয়ে টাকা আদায় করতে পারেন? আপনি কতদিন হাইকোর্টে ওকালতি করছেন?’ জবাবে আইনজীবী বলেন, ‘ধর্মাবতার ২২ বছর ওকালতি করছি।’ এ কথা শুনে ওই আইনজীবীর সিনিয়র কে, তা জানতে চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আইনজীবী বলেন, ‘আমি এখন বলতে চাইছি না। কারণ, তিনি এখন বিচারপতি রয়েছেন।’ এরপরেও ওই বিচারপতির নাম জানতে চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আইনজীবী তখন জানান, ‘বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের জুনিয়র ছিলাম আমি।’ এরপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘ঠিক আছে। আপনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা নিয়ে কী বলবেন? তা ছাড়া আপনি আদালতের অনুমতি না নিয়েই এখানে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছেন। এই আদালত কী আপনাকে ফোনে কথা বলার অনুমতি দিয়েছে?’

এরপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই আইনজীবীকে শোকজ করেন। কেন ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা করা হবে না, তা সাত দিনের মধ্যে জানতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। পাশাপাশি তাঁর নির্দেশ, ‘মক্কেলের কাছ থেকে পেপার বুক-সহ টাকা নেওয়ার অভিযোগ খতিয়ে দেখবে হাই কোর্টের অরিজিনাল সাইট। অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পেলে এফআইআর করতে হবে।’ আগামী ২৬ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − six =