শাহজাহানের বাড়ি সিল করা হয়নি কেন প্রশ্ন বিচারপতির

সন্দেশখালি-মামলায় ইতিমধ্যেই রাজ্য পুলিশকে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। তবে মঙ্গলবার আরও এক ধাপ এগিয়ে তদন্ত কোন পথে এগোচ্ছে বা সেটা আদৌ যথাযথ কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে দেখা গেল আদালতকে। প্রসঙ্গত, বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চে চলছে সন্দেশখালি সংক্রান্ত মামলার শুনানি। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি চলাকালীন প্রশ্ন করা হয়, ইডি আধিকারিকদের ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনার পর পুলিশ শাহজাহান শেখের বাড়িতে গিয়েছিলেন কি না। গেলেও বাড়িটা সিল করা হল না কেন, কেন কারও সঙ্গে কথা বলা হল না মঙ্গলবার শুনানিতে সেই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। এরই রেশ ধরে বিচারপতি সেনগুপ্ত এও জানান, ‘পুলিশের তদন্তের ধরন পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার মতো মনে হচ্ছে।’ এরই প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে ইডি অফিসাররা ওই জায়গায় গেলে নিরাপত্তা দেওয়া হবে কি না, সেটাও পুলিশের কাছে জানতে চান বিচারপতি।

এদিন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এও জানতে চান, পাথর দিয়ে আঘাতের কথা জানার পরও লঘু ধারা দেওয়া হল কেন সে ব্য়াপারেও। পাশাপাশি নির্দেশ দেন, বাড়ির সামনে সিসিটিভি বসিয়ে পুরো ঘটনা রেকর্ড করাতে হবে।

এদিকে মঙ্গলবারের শুনানিতে এজি কিশোর দত্ত জানান, গত ৫ জানুয়ারি, ঘটনার দিন শাহজাহানের বাড়িতে গেলেও ভিতরে যাওয়া হয়নি। এ কথা শুনে বিচারপতি এজিকে উদ্দেশ্য় করে এও বলেন, ‘আপনার কাছে তো বাড়ি সিল করার ক্ষমতা আছে।’ এরই প্রেক্ষিতে এজি কিশোর দত্ত বিচারপতি সেনগুপ্তকে জানান, ঘটনাস্থল সন্দেশখালির মধ্যে পড়ে না, ন্যাজাট থানার আওতায় পড়ে তাই ওই থানাকে জানানো হয়েছিল। এরপরই তল্লাশি যে চালানো হয়েছে, সেই রেকর্ড কোথায়, জানতে চান বিচারপতি। এজি জানান, সেদিন রাতেই বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। এরই প্রেক্ষিতে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘কী পেলেন সেখান থেকে? প্রতিবেশীদের কিছু জিজ্ঞেস করলেন? না বাড়িটা দেখেই চলে এলেন?’ এরপরই রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ‘এত সিরিয়াস ঘটনা। বাড়িটা সিলও করলেন না? এটাকেই পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা বলে।’

এদিকে এদিন সিআরপিএফ জওয়ানদের সম্পর্কে রাজ্য জানায়, ৮ টা ২১ মিনিটে তল্লাশি শুরু হলেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সকাল ৯ টায় প্রাতঃরাশ খেতে দেখা গিয়েছে। এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে ইডি। ইডি-র আইনজীবী এস ভি রাজু আদালতে জানান, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বানানো গল্প।’

এদিকে আদালতে এদিন যখন চাপ বাড়ছে রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের ওপর ঠিক সেই সময়েই কলকাতা হাইকোর্টে নিজের অবস্থান বদলালেন শাহজাহান। সোমবারই সন্দেশখালি মামলার পার্টি বা অংশ হতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে মঙ্গলবারে তিনি জানান, আপাতত পার্টি হতে চান না তিনি। এদিন হাইকোর্টে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চে এমনটাই জানান তাঁর আইনজীবী সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন শাহজাহানের আইনজীবী বিচারপতিকে এও বলেন, ‘আদালত মনে করলে, পরে পার্টি হতে বললে হব।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − 4 =