বেআইনি নির্মাণ নিয়ে এবার জরিমানা দ্বিগুণ করলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। কারণ, গার্ডেনরিচে যে ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে, তাতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে উঠেছে প্রশ্ন। এদিকে বহুকাল ধরেই শহরে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ আছেই। অলিতে-গলিতে জলাশয় বুজিয়ে ফ্ল্যাট তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছিল বহুকাল ধরেই। নিয়ম না মেনে মাথা তুলছে বহুতল, এমন অভিযোগও উঠেছে। আর সেই কারণেই এবার নির্মাণ রুখতে এবার আরও কড়া পদক্ষেপ করা হল কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে।
এদিকে নন্দীবাগান ১০৬ নম্বর ওয়ার্ড বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত একটি মামলা ছিল বুধবার। সেই মামলায় অভিযুক্তের জরিমানা দ্বিগুণ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এদিন বুধবারও অমৃতা সিনহা বলেন, ‘আদালত চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারে না। বিচার না দিলে অন্যায় করা হবে। সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের উপর ডিভিশন বেঞ্চের কোন স্থগিতাদেশ নেই।’ এখানেই শেষ নয়, ১ লাখ টাকা জরিমানা দিতে না চাওয়া অভিযুক্তের জরিমানা বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা করে আদালত। সম্প্রতি গার্ডেনরিচে ঝুপড়ির ওপর বাড়ি ভেঙে পড়ার পর অভিযোগ উঠেছে, ওই বহুতল কোনও অনুমোদন ছাড়াই মাথা তুলছিল। উল্লেখ্য, গার্ডেনরিচকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত দশ জনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। এরপরই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কড়া নির্দেশ দিতে দেখা যায় বিচারপতি সিনহাকে।
এদিন হাওড়ার এই বেআইনি নির্মাণের ঘটনায় প্রোমোটারকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি আগামী তিনমাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আবাসনের বাসিন্দাদের আবাসন খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। একইসঙ্গে আবাসনটি ভেঙে ফেলার নির্দেশও দেন বিচারপতি। এদিকে ২ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। তাঁর আগে প্রোমোটার আদালতে জরিমানার অর্থ জমা না দিলে তাঁকে বড় বিপদে পড়তে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি সিনহা।
এদিকে আদালত সূত্রে এও জানা গেছে, হাওড়ার কালীপ্রসাদ চক্রবর্তী লেনে কোনরকম অনুমোদন ছাড়াই তৈরি হয়েছিল একটি পাঁচতলা আবাসন। শুধু তাই নয় সেই আবাসনটির প্রত্যেকটি ফ্ল্যাট ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা দরে বিক্রি করে দেয় প্রোমোটার। নির্মাণটিকে কেন্দ্র করে মামলা দায়ের হয়। অভিযোগ, মামলা চলাকালীনই একতলা থেকে সেটিকে পাঁচ তলায় রূপান্তরিত করে দেন প্রোমোটার। এদিন মামলার শুনানিতে গার্ডেনরিচের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বিচারপতি বলেন, ‘আদালত এতদিন নরম ছিল তাই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। যে পরিস্থিতি এসে দাঁড়িয়েছে তাতে আদালত আর কোন বেআইনি নির্মাণকে রেয়াত করবে না।’
এদিন এই বেআইনি নির্মাণ প্রসঙ্গে বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানান, ‘যারা এসবের যুক্ত তাদের একটা ভাল শিক্ষা দিতে হবে, যাতে আগামীদিনে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ হয়। আদালত চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারে না। বিচার না দিলে অন্যায় করা হবে।’ এদিন বিচারপতি সিনহা আরও উল্লেখ করেন, সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের উপর ডিভিশন বেঞ্চের কোনও স্থগিতাদেশ নেই।