জামিন পেলেন জ্যোতিপ্রিয়

রেশন দুর্নীতির মামলায় এবার জামিন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। ইডির বিশেষ আদালতে জামিন পেয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী। বুধবার বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় এজলাসে জামিন পান প্রাক্তন মন্ত্রী। বস্তুত, এক সময় ইডির আইনজীবীরা জ্যোতিপ্রিয়কে ‘দুর্নীতির গঙ্গাসাগর’ বলেছিল। এইবার সেই ‘কিংপিন’-ই পেয়ে গেলেন জামিন। আদালতের পর্যবেক্ষণ, পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রমাণ এখনও জোগাড় করতে না পারায় জেলমুক্তি তাঁর।

আদালত সূত্রে খবর,পঞ্চাশ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ড জামিন মিলেছে তাঁর। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর গ্রেফতার হন জ্যোতিপ্রিয়। এই গ্রেফতারির চোদ্দমাস পর জামিন মিলল তাঁর। এর আগেও এই মামলায় জামিন পেয়েছিলেন বাকিবুর রহমান, শঙ্কর আঢ্যরা। এদিন জামিন পেলেন জ্যোতিপ্রিয়।

বস্তুত, পুরনিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে রেশন দুর্নীতির গন্ধ পায় কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এরপর সর্বপ্রথম গ্রেফতার হয় চালকল মালিক বাকিবুর রহমান। এরপর ওই বছরই অর্থাৎ ২০২৩ সালে গ্রেফতার হন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী। দীর্ঘদিন জামিনের জন্য আবেদন করেন জ্যোতিপ্রিয়। কখনও নিজেকে নির্দোষ বলেছেন কোর্টে কখনও বা শারীরিক অসুস্থতার কারণ দর্শিয়েছেন তিনি। তবে ‘হেভিওয়েট’ তত্ত্বে বারবার জামিন নাকচ হচ্ছিল তাঁর। এ দিনও বিশেষ ইডি আদালতে বালুর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানান তাঁর আইনজীবীরা। একইসঙ্গে তিনি জানতে চান, এখন জ্যোতিপ্রিয়কে তাঁকে হেফাজতে রাখার প্রয়োজনীতা কী তা নিয়েও। সেই বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁর আইনজীবীরা। এদিকে, ইডির যুক্তি জ্যোতিপ্রিয় প্রভাবশালী। তিনি বাইরে বের হলে তদন্তে প্রভাব পড়তে পারে। এ দিকে, এই মামলায় আরও এক ব্যক্তি যাঁর বাড়ি তপসিয়া এলাকায় তাঁকে এখনও গ্রেফতার  করা সম্ভব হয়নি কেন্দ্রীয় এজেন্সির পক্ষে। আরও যে সকল অভিযুক্ত ছিল তাঁরাই জামিনে মুক্ত। আদালত সূত্রে খবর, বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়ের এই প্রসঙ্গে মন্তব্য, ‘দীর্ঘদিন উনি জেলে। অন্য অভিযুক্তরা জামিন পেয়েছেন। তাহলে কেন আটকে রাখা হবে প্রাক্তন মন্ত্রীকে?’ ফলে মূলত এই ইস্যুতেই জামিন দেয় ইডি আদালত।

তবে একইসঙ্গে নানা শর্তও আরোপ করা হয়েছে এই জামিনের ক্ষেত্রে। আদালতের তরফ থেকে নির্দেশ, তিনি দেশ ছেড়ে বাইরে যেতে পারবেন না। পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। তদন্তকারী দলকে সাহায্য করতে হবে। পাশাপাশি এই মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে পারবেন না। আইনজীবী শামিম আহমেদ বলেন, ‘সময় এসেছে তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধ তদন্ত করা। কারণ প্রতিটি তদন্তের ক্ষেত্রে দেখছি আদালতের নির্দেশের পরই সেই তদন্তের গতি স্লথ হচ্ছে। প্রমাণ জোগাড় করতে না পারার কারণে অপরাধীরা ছাড়া পাচ্ছেন। কেন বারেবারে হচ্ছে? যাঁদের নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থা বলা হচ্ছে তাঁরা প্রমাণ করছেন নিরপেক্ষ নয়।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − 3 =