আবারও একবার বিতর্কের শিরোনামে কাঞ্চন মল্লিক। আরজি কর-কাণ্ডে রাজ্য জুড়ে চলা প্রতিবাদের আবহে কাঞ্চন হঠাৎ-ই প্রশ্ন করে বসেন, যাঁরা কর্মবিরতিতে অংশ নিচ্ছেন, তাঁরা সরকারি বেতন নিচ্ছেন তো? খানিকটা কৌতুকের ঢঙেই এই প্রশ্ন তুলেছেন অভিনেতা তথা তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন। তাঁর এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে একে একে মুখ খুলছেন তাঁরই বন্ধু-সহকর্মীরা। প্রতিবাদ জানাচ্ছে টলিপাড়াও। তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে চিকিৎসক মহলে।
কাঞ্চন হঠাৎ-ই জানতে চান, ‘যাঁরা কর্মবিরতি করছেন শাসকদলের বিরুদ্ধে। ভাল। তাঁরা সরকারি বেতন নিচ্ছেন তো নাকি নিচ্ছেন না? এটা আমার প্রশ্ন। বোনাস নেবেন তো? না নেবেন না?’ এর পাশাপাশি সরকারি পুরস্কার গ্রহণ করবেন কি না, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। যে চিকিৎসকরা প্রায় এক মাস ধরে বিচার আর নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন করছেন, তাঁদের উদ্দেশে কাঞ্চন বলেন, ‘এমন কোনও কাজ আপনাদের করা উচিত নয় যে ডাক্তার ভগবান বলতে দু’বার ভাবেন।’
এরপর অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি কাঞ্চন মল্লিকের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। সহকর্মী তথা বন্ধু কাঞ্চনকে তিনি লিখেছেন, ‘অনুপ্রেরণার জেরে চোখ, কান, মাথা, মনুষ্যত্ব, বুদ্ধি-বিবেচনা, সব ঢুকিয়ে রেখে চাবিটা হারিয়ে ফেলেছিস। খুঁজে ফেলে খবর দিস।’ সুদীপ্তা এও বলেন, ‘অনেকদিন ধরে একসঙ্গে অভিনয় করেছি। ওকে আমার জীবন থেকে ত্যাগ করলাম। শুভবুদ্ধি ফিরে পাক। চাবিটা খুঁজে ফেলে আবার যোগাযোগ করব।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় কাঞ্চনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন আর এক অভিনেত্রী বিদিপ্তা চক্রবর্তী। কাঞ্চনের মন্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন চিকিৎসকেরাও। যে জুনিয়র ডাক্তাররা প্রতিবাদ করছেন, তাঁরা বলছেন, ‘আমরা বেতন পাই না। যেটা পাই, সেটা হল স্টাইপেন্ড। নিট পিজি-র মতো কঠিন পরীক্ষায় পাশ করে এই জায়গায় এসেছি। তাই স্টাইপেন্ড পাই। তাই বলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে তো রুখে দাঁড়াবই।’ মুখ খুলেছেন সিনিয়র চিকিৎসকেরাও। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘আমরা পাবলিক সার্ভেন্ট। আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মী নই। উনি প্রশ্ন করেছেন করুন। সে তো মুখ্যমন্ত্রীকেও প্রশ্ন করতে পারেন।’ এরই পাশাপাশি আর এক চিকিৎসক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দুর্নীতির টাকা কোথায় আসে, সেটা আমরা জানি। বিধায়কের জেনে রাখা দরকার, অর্থের ভাগ বাটোয়ারার হিসেব আমরা সিবিআই-এর হাতে তুলে দিয়ে এসেছি।’