ফের রামকৃষ্ণ মিশন ও ভারত সেবাশ্রমের কার্তিক মহারাজের বিষয়ে মুখ খুলতে দেখা গেল তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বাঁকুড়ার ওন্দার দলীয় প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী ও সুজাতা মণ্ডবের সমর্থনে আয়োজিত সভামঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি রামকৃষ্ণ মিশনের বিরুদ্ধ নই। কেন একটা ইনস্টিটিউশনের বিরুদ্ধে হব? মহারাজ অসুস্থ ছিলেন, আমি তো কয়েকদিন আগেও দেখতে গিয়েছিলাম। আমি বলেছি ২-১ জনের কথা। সাগরে ভারত সেবাশ্রম সংঘের অফিস আছে, আশ্রম আছে। ওরা সত্যিই আমায় খুব ভালোবাসে এবং মানুষের কাজ করে। আমি নির্দিষ্ট একজনের নাম বলেছিলাম। তাঁর নাম কার্তিক মহারাজ। তিনি আমাদের এজেন্ট বসতে দেননি। ভোটের দু’দিন আগে মুর্শিদাবাদে যে অশান্তি হয়েছিল, তাঁর হোতা ছিলেন তিনি, আমি সেই জন্য বলেছিলাম।’
এখানেই শেষ নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘আগে অধীর কংগ্রেস করতেন, এখন বিজেপি করেন। মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে যেখানে ভোটের দু’দিন আগে অশান্তি হয়েছিল, সেখানেই ওঁর আশ্রম। তিনি আশ্রম চালান, কোনও আপত্তি নেই। আমি যখন জিজ্ঞাসা করলাম, ওখানে তৃণমূলের এজেন্ট নেই কেন? বলল কার্তিক মহারাজ বলেছে। ওখানে কিছু লোককে ক্ষেপিয়েছে, যাঁরা ছানা ব্যবসায়ী। খবর আমিও রাখি। ধর্মের নামে আপনি বিজেপি করেন। আপনি বিজেপি করুন, কিন্তু চিহ্নটা বুকে লাগিয়ে রেখে করুন। লুকিয়ে কেন? প্রমাণ ছাড়া আমি বলি না?’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ প্রশ্ন, ‘আমাদের রাজ্য বাংলা, আর তৃণমূলের এজেন্টকে বসতে দেওয়া হবে না! ভোটের দু’দিন আগে অশান্তি করাবে, তাদের আমি ছেড়ে দেব?’
প্রসঙ্গত, কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে গত শনিবার সরব হতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আরামবাগের সভায় দলীয় প্রার্থী মিতালি বাগের সমর্থনে বক্তব্য রাখার সময় মমতা সরাসরি দাবি করেন, দুই সাধু সঙ্ঘের কেউ কেউ সরাসরি রাজনীতি করছেন। এমনকী সরাসরি নাম ধরেও নির্বাচনী জনসভা থেকে আক্রমণ শানান তৃণমূল নেত্রী। তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘সব সাধু এক হন না, সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি সবাই সমান? এই যে বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন, আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার তালিকায় তারা দীর্ঘদিন ধরেই আছেন। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্ট বসতে দেব না। সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। তার কারণ, তিনি সরাসরি রাজনীতি করে দেশটার সর্বনাশ করছেন।’