কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্যপদ ছাড়লেন কৌস্তভ বাগচী। এ ব্যাপারে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে তিন পাতার চিঠিও পাঠিয়েছেন ব্যারাকপুরের এই বাসিন্দা। ফলে লোকসভা ভোটের আগে অস্বস্তিতে কংগ্রেস। কারণ, দীর্ঘদিন ধরেই হাত শিবিরের সঙ্গে সম্পর্ক তাঁর। কৌস্তভের অভিযোগ, এখন আত্মসম্মান নিয়ে কংগ্রেসে থাকা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। চিঠিতে সে কথার উল্লেখও করছেন তিনি। দলের সভাপতি ছাড়াও বঙ্গ কংগ্রেসের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষককে চিঠির প্রতিলিপিও পাঠিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছর গ্রেফতার হয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। পরে যদিও জামিন পেয়ে যান। এরপরই আদালত থেকে বেরিয়েই সে সময় কৌস্তভ হুঙ্কার করেছিলেন, ‘যদি না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে উৎখাত করবেন, ততদিন পর্যন্ত মাথার চুল রাখবেন না।’ এরপরই মস্তক মুণ্ডন করেন তিনি। কিন্তু পরবর্তী কালে দেখা যায় লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-কে পর্যুদস্ত করতে কংগ্রেস-তৃণমূল ইন্ডিয়া জোটে সহাবস্থান করছে। যা কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি এই নেতা। প্রকাশ্যেই একাধিকবার দলের বিরুদ্ধে বিষোদগারও করেন। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, সংবাদমাধ্যম থেকে তিনি জানতে পেরেছেন তৃণমূলের সঙ্গে জোটের বিরোধিতা করার জন্য নাকি দল তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। তবে তাতে তিনি বিশেষ পাত্তা দিতে রাজি ছিলেন না। ডোন্ট কেয়ার বার্তা দিয়ে স্পষ্ট লেখেন, ‘তৃণমূল আমাদের চোখে চোর ছিল, থাকবে। বাংলার কংগ্রেস কর্মীরা তৃণমূলের সঙ্গে নরম অবস্থান মানবে না।’ এরপরই দেখা যায় কংগ্রেস মুখপাত্রদের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে কৌস্তভের নাম। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি দলবিরোধী কাজের জন্যই তাঁকে সরিয়ে ফেলেছিল কংগ্রেস কি না তা নিয়ে। এরপর নাম না করেই ২০ অগাস্ট তোপ দেগেছিলেন খোদ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। বলেছিলেন, ‘আমাদের দলে অনেক বিপ্লবী আছে। তাঁরা কে কোথায় কী পোস্ট করছে তা আমাদের পক্ষে সব সময় জানা সম্ভব নয়। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে কংগ্রেস ছাড়ার পরই স্বাভাবিক ভাবেই বঙ্গ রাজনীতিতে যে জল্পনা চলছে তাহলে কি তিনি যোগ দেবেন বিজেপিতে। এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য আর একটু অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন খোদ কৌস্তভ। সঙ্গে এও জানান, ‘রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চলবে। তবে দু’একদিন অপেক্ষা করতে হবে। তারপর সবটা স্পষ্ট হবে।’ একই সঙ্গে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়েও মন্তব্য করে কৌস্তভ বলেন, ‘আমি বরাবর বলেছি বিরোধী রাজনীতির মুখ হয়ে উঠেছেন শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উৎখাত করার লড়াইয়ের সেনাপতি শুভেন্দু। এ কথায় সন্দেহ নেই।’ এ দিকে, কৌস্তভের দলবদল নিয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেছেন, ‘পুকুর নদীর গল্প শুনিয়ে,এবার পচা পুকুরে ডুব।’