চলতি বছর গরম পড়তেই সারাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় চলেছে রেকর্ড ভাঙা গড়ার খেলা। বঙ্গে এপ্রিলে মাসে দুই থেকে তিনটি তাপপ্রবাহ বয়ে গেলেও এ বছর তাপপ্রবাহের ব্যাপ্তি দীর্ঘ হবে বলে জানিয়েছিলেন আবহাওয়াবিদরা। হয়েছেও তাই।
তবে শুধু এপ্রিল নয়, এ বছর মে মাসেও তাপপ্রবাহ দেখা দিতে পারে বলে আগেই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এমনকি এ বছর বৃষ্টিপাত এবং বজ্রপাতও বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পেতে পারে শিলাবৃষ্টিও।
শিলাবৃষ্টির কারণ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিভিয়ার স্টমর্স ল্যাবরেটরির ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, শিলাবৃষ্টি সৃষ্টি হওয়ার প্রধান কারণ হল ভূ-পৃষ্ঠের তীব্র তাপমাত্রা। তীব্র তাপের কারণে ভূ-পৃষ্ঠের জলীয়বাষ্প ঊর্ধ্ব আকাশের দিকে উঠতে থাকে। এই জলীয় বাষ্প অনেক উঁচুতে গিয়ে ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় ছোট ছোট বরফে পরিণত হয়। আশেপাশের বৃষ্টির ফোঁটা ও অন্য বরফ টুকরো মিলে বরফখণ্ডগুলো বড় ও ভারি হতে থাকে। এভাবে এক সময় যখন বরফ বা শিলাখণ্ডের ওজন বেড়ে যায় তখন এটি বৃষ্টির সঙ্গে নিচের দিকে পড়তে শুরু করে। এভাবে ভূ-পৃষ্ঠে বৃষ্টির সঙ্গে শিলা বা বরফখণ্ড নেমে আসে। আর এই শিলা গোল করে নাড়ুর আকারে বানিয়ে খান অনেকেই। তবে গবেষকরা বলছেন, বৃষ্টির সঙ্গে পড়া এসব শিলা খাওয়া মোটেই নিরাপদ না। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, বৃষ্টির সঙ্গে পড়া শিলাতে নানা ধরনের দূষিত উপাদান থাকে; যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এদিকে গবেষণায় দেখা গেছে, শিলাতে নাইট্রেটসহ বেশকিছু ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে। এই উপদানগুলো পানিতেও থাকে, তবে শিলাতে এসবের উপস্থিতি সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি।
একইসঙ্গে তাঁরা এও জানিয়েছেন, যখন শিলাবৃষ্টি শুরু হয়, তখন সেটাকে আইস নিউক্লিয়েশন বলা হয়। এই আইস নিউক্লিয়েশনে বাতাসের বিভিন্ন পলিউশন থাকে। এই পলিউশনের কিছু কিছু সাফসটেন্স আইস নিউক্লিয়া হিসেব কাজ করে। অর্থাৎ যে আইস গঠিত হয়, তার সিড হিসেবে কাজ করে। যখন পলিউশনটা সিড হিসেবে কাজ করে তখন আইসটা চারিদিকে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এরপর একটা আরেকটার সঙ্গে যুক্ত ওয়াটার কনডেন্সড তৈরি করে। এই ওয়াটার কনডেন্সড শিলায় রুপান্তরিত হয়। শিলাটা যখন বাতাসে হালকা থাকে তখন ভেসে থাকে, যখন এটি ভারি হয় তখন ভুপৃষ্ঠে নেমে আসে। মানুষ যদি এটা খায় তাহলে এর মধ্যে থাকা পলিউশন শরীরে প্রবেশ করে। এজন্য শিলা খাওয়া উচিত না। যে কোনও পানীয় পানযোগ্য হওয়ার জন্য ৪০টি প্যারামিটার রয়েছে। শিলা এই ৪০টি প্যারামিটার ফুলফিল করে না। কারণ, এটার জন্মই হলো পলিউশন সিড থেকে। কোনোভাবেই শিলা খাওয়া যাবে না। বিশেষ করে শিশুরা যেন শিলা না খায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।