জামিন পেলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সিবিআই-এর দায়ের করা দিল্লির আবগারি নীতি ‘কেলেঙ্কারি’ মামলায় শুক্রবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে জামিন দিল বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চ। গত ৫ সেপ্টেম্বর এই মামলার রায় সংরক্ষিত রেখেছিল আদালত। তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ এবং সিবিআই-এর দায়ের করা দুর্নীতির মামলায় তাঁর গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে দুটি পৃথক পিটিশন দায়ের করেছিলেন কেজরিওয়াল। যেহেতু, এই মামলায় বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় ধরে চলবে, তাই আপ প্রধানের জামিন মঞ্জুর করল আদালত। কেজরিওয়াল জামিনে জেলের বাইরে এলে তথ্য-প্রমাণ নষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল সিবিআই। তবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এই আশঙ্কাকে গুরুত্বই দিল না সুপ্রিম কোর্ট।
শুনানিতে বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, ‘গ্রেফতারিরর আইনি বৈধতার প্রশ্নে হস্তক্ষেপ নয়। তবে জামিন দেওয়া হল।’ অন্যদিকে বিচারপতি ভুঁইয়া তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘গ্রেফতারির প্রয়োজনীতা এবংসময় নিয়ে পৃথক মতামত রয়েছে। সিবিআইয়ের গ্রেফতারিরর সময় একাধিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ২২ মাস ধরে তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করলেও গ্রেফতার করার প্রয়োজন বোধ করেননি।’
এর পাশাপাশি বেঞ্চ এও জানায়, ‘অভিযুক্ত ইডি কেসে জামিন পাচ্ছেন সেই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পরই গ্রেফতারি নিয়ে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। সিবিআইয়ের দেরিতে গ্রেফতারি জাস্টিফায়েড নয়। ট্রায়াল প্রক্রিয়া কখনই শাস্তি হয়ে দাঁড়াতে পারে না।’
গত ৫ অগাস্ট সিবিআই-এর দায়ের করা এই মামলায়, মুখ্যমন্ত্রীর জামিনের আবেদন খারিজ করেছিল দিল্লি হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কেজরিবাল। ইডির হেফাজতে থাকাকালীনই, ২৬ জুন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। এর আগে, ১২ জুলাই দিল্লির আবগারি নীতি কেলেঙ্কারির অভিযোগের প্রেক্ষিতে, ইডি যে মামলা দায়ের করেছিল, সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলেন কেজরিওয়াল। গত ২১ মার্চ, লোকসভা ভোটের ঠিক আগে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর বাসভবন থেকেই গ্রেফতার করেছিল ইডি। এদিন সিবিআই-এর মামলাতেও জামিন পাওয়ায় ছয় মাস পর অবশেষে জেল থেকে বের হচ্ছেন আপ প্রধান, অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
২১ মার্চ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করা হলেও, নির্বাচনের সময় প্রচার করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়েছিল কেজরীবালকে। সেই সময় দিল্লি ও হরিয়ানায় লোকসভা ভোটের প্রচারে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে, ভোট পর্ব মেটার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আবার ফিরে যেতে হয়েছিল কারাগারে।
২০২১-২২ সালে দিল্লি সরকারের এক নতুন আবগারি নীতি প্রণয়ন এবং কার্যকর করেছিল। এই ক্ষেত্রে কেজরিওয়াল-সহ আপ নেতারা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ। নয়া আবগারি নীতিটি পরে বাতিল করা হলেও, তদন্তে একের পর এক আপ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল ছাড়াও ইডি-সিবিআই-এর নজরে রয়েছে আপ নেতা তথা দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া, আপ সাংসদ সঞ্জয় সিং। সিবিআই এবং ইডি-র মতে, আবগারি নীতি সংশোধন করার সময় অনিয়ম করা হয়েছিল এবং লাইসেন্সধারীদের অযাচিত সুবিধা দেওয়া হয়েছিল।