বৃষ্টিতে জল সরে যেতেই সামনে চলে এসেছে কলকাতার রাস্তার বেহাল দশার ছবিটা। কোথাও পিচের আস্তরণ উঠে গিয়ে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ আবার কোথাও কোথাও কংক্রিটের রাস্তাতেও তৈরি হয়েছে গর্ত। যার জেরে পথচলতি মানুষ থেকে চালক প্রত্যেকেই তূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার। সেই সমস্যা থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে দ্রুততার সঙ্গে বেহাল রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু করল কলকাতা পুরসভা।
উল্লেখ্য, সপ্তাহখানেক আগে কলকাতায় একদিনে যা বৃষ্টি হয়েছে, সেই পরিমাণ বৃষ্টি সাধারণত দেড়মাসে হয়, পরিসংখ্যান অন্তত তেমনটাই বলছে। স্বাভাবিকভাবেই ওই বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হয়েছিল মহানগরের রাজপথ থেকে অলিগলি। এই জমা জল ধীরে ধীরে সরে যেতেই কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ প্রান্তে রাস্তার কঙ্কালসার চেহারাটা সামনে আসে।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা কর্পোরেশনের এক আধিকারিক জানান, বর্ষাকালে রাস্তা জলের তলায় চলে যায় অনেক সময় । আবার নাগাড়ে বৃষ্টি হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তা। তা পিচ রাস্তা হোক কিংবা কংক্রিটের বর্ষাকালে ক্ষতিগ্রস্ত হবেই । তবে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকলে ভোগান্তির শিকার হতে হয় সাধারণ নাগরিকদের যানবাহন চালকদের । যানবাহনের গতিও শ্লথ হয়ে যায়।তবে অন্যান্যবারের মতো এই ভোগান্তি দীর্ঘস্থায়ী হবে না। কারণ, দ্রুত ময়দানে নেমেছে কলকাতা কর্পোরেশনের রাস্তা বিভাগ। সেই সব খানাখন্দ মেরামতি শুরু হয়েছে। উঠে যাওয়া পিচের আস্তরণের উপর পড়েছে নতুন পিচের প্রলেপ। গত শনিবার থেকে এই অভিযান চালাচ্ছে কলকাতা কর্পোরেশনের রাস্তা বিভাগ। আগামী বেশ কয়েকদিন চলবে এই অভিযান।
আর কলকাতা পুরসভার আধিকারিকের প্রতিশ্রুতি যে সত্য তা নজরে এসেছে শ্যামবাজার চত্বরে পা রাখতেই। সেখানকার একাধিক রাস্তা সেখানে ইতিমধ্যেই পিচের প্রলেপ পড়েছে। একইভাবে বিডন স্ট্রিটের একাংশ পানীয় জল সরবরাহে কাজের জন্য যে রাস্তা খোঁড়া হয়েছিল তাতে পড়ছে প্রলেপ, যাতে রাস্তা ফিরছে পুরনো চেহারায়।
একই ছবি মধ্য কলকাতার বিবাদীবাগ এলাকাতেও। এখানেও বর্ষার জেরে খানাখন্দে ভরে রাস্তা। সেই রাস্তাও হয়েছে মসৃণ । দক্ষিণ কলকাতার জেমস লং সরণি ও জনকল্যাণ মোড়ের সংযোগস্থলে কাজ করেছে রাস্তা বিভাগ। একইসঙ্গে পার্ক সার্কাস মোড়, ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস, ঢালাই ব্রিজ, যাদবপুরের কয়েকটি রাস্তা বেহাল অবস্থার হাল ফিরেছে ইতিমধ্যেই।
এই প্রসঙ্গে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, ‘কলকাতার রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ নয় । আমরা যদি তিন চার দিনের ড্রাই স্পেল পাই, তাহলে সমস্তটাই সারিয়ে দেব। কলকাতার রাস্তার নিচে গঙ্গার মাটি আছে। তাই বর্ষাকালে মাটি দুর্বল হয়ে যায়৷ রাস্তা খারাপ হয়ে যায়।এটা বরাবর হয়ে আসছে। কলকাতার রাস্তার নিচে এত ইউটিলিটি যে সব রাস্তা ঢালাই করে দেওয়া সম্ভব নয়। আর বৃষ্টিটা দেখুন। কয়েক দিনে ব্যাপক বেশি বৃষ্টি হয়েছে। একটু ড্রাই স্পেল পেলে সবটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’
ওই পুর আধিকারিক জানান, বর্ষা কাটতে না কাটতেই সামনে শারদ উৎসব ফলে সেটাও অন্যতম লক্ষ্যবস্তু । শারদ উৎসবের বেশ কয়েকদিন আগেই কলকাতার প্রতিটি বড় রাস্তা থেকে শুরু করে অলিগলি সমস্ত প্যাচওয়ার্ক কমপ্লিট হয়ে যাবে ।