বড়দিন আর বর্ষবরণের উৎসবে মাততে কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে শহরজুড়ে। তার সঙ্গে তাল মেলাতে সাজছে রেস্তোরাঁ, বার আর পাবও। তবে উৎসবের দিনে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মদ্যপ ব্যক্তিদের গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফেরার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে। কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে যে, অতিরিক্ত মদ্যপান করলে সেই ব্যক্তিকে গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসতে দেওয়া হবে না। বরং অন্য গাড়ি ডেকে তাঁকে বাড়ি পাঠানো হবে। আর তিনি যদি গাড়ি ছেড়ে যেতে আপত্তি জানান সেক্ষেত্রে চালক ভাড়া করে তাঁকে বাড়ি পাঠানো হবে। লালবাজার সূত্রে এও জানানো হয়েছে, শহর-শহরতলির সমস্ত বার এবং রেস্তোরাঁকে এই মর্মে নোটিস পাঠাচ্ছে হোটেল-রেস্তোরাঁ সংগঠন।
এদিকে হোটেল-রেস্তোরাঁ সংগঠনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিবারই এই বড়দিনের সময় বার-রেস্তোরাঁতে ভিড় বাড়ে। আর এই রেস্তোরাঁ বা বারে কে কতটা মদ্যপান করবেন সেটা বার কর্তৃপক্ষ ঠিক করতে পারে না। আবার কাউকে মদ খাওয়া থেকে বিরত করাও যায় না। তাই অতিরিক্ত মদ্যপান করলে সেই ব্যক্তিকে আর গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসতে দেবে না রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ। হোটেলে থাকা বেয়ারারা গাড়ি বা চালক ডেকে দেবেন। ইতিমধ্যেই গাড়ির চালক সরবরাহের জন্য অ্যাপ চালু করেছে এক বেসরকারি সংস্থা। তাদের মাধ্যমেই চালক ভাড়া করে মদ্যপ ব্যক্তিকে নিজের গাড়ি দিয়ে ফেরত পাঠানো হবে। তার জন্য ওই ব্যক্তিকে মেটাতে হবে চালকের মজুরি, সঙ্গে তাঁর গন্তব্যে ফেরার খরচও।
তবে সবকিছুর পরও পুলিশি নজরদারি তো থাকছেই। একইসঙ্গে এবার বড়দিনের উৎসবে মদ্যপ ব্যক্তিদের উপর নজরদারি চালাবে বার- রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষও। তার জন্য মোতায়েন থাকছে বিশেষ বেয়ারা। তাঁরাই অতিরিক্ত মদ খেয়ে ফেলা ব্যক্তি যাতে সুস্থভাবে বাড়ি ফিরতে পারেন তার ব্যবস্থা করে দেবেন। কলকাতা পুলিশের কর্তারা জানাচ্ছেন, মদ খেয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করতে জরিমানার পরিমাণ যেমন বাড়ানো হয়েছে, তেমনই শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ব্রিদ অ্যানালাইজার দিয়ে চলছে পরীক্ষা। যা দিয়ে বোঝা যাবে তিনি মদ্যপ কি না। কিন্তু তাতেও মদ খেয়ে গাড়ি চালানো পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। আর এখন উৎসবের মরশুম।
কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন রিজিয়নের তরফ থেকে তাঁদের সংগঠনের আওতায় থাকা প্রায় ১৫০০ হোটেল, বার, রেস্তোরাঁয় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও ব্যক্তি অতিরিক্ত মদ খেয়ে নিলে কোনওভাবেই যেন তাঁর হাতে গাড়ি না দেওয়া হয়। অন্য ক্যাব বা ট্যাক্সি ডেকে আগে তাঁকে বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা করা হবে। বলা হবে, নিজের গাড়ি পরদিন এসে যেন নিয়ে তিনি নিয়ে যান। আর যদি গাড়ি ফেলে রেখে না যেতে চান, তা হলে অ্যাপের মাধ্যমে চালক ডেকে তাঁকে বাড়ি পাঠাতে হবে। সংগঠনের সভাপতি সুদেশ পোদ্দার জানান, ‘ইতিমধ্যেই আমরা আমাদের অ্যাডভাইসরি আমাদের সংগঠনের আওতায় থাকা সমস্ত বার-রেস্টুরেন্টকে পাঠিয়ে দিয়েছি। পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে আরও নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।’