কসবা কাণ্ডে সিট গঠন কলকাতা পুলিশের, মিলল ৭ ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ

কসবা লকলেজের ঘটনায় ফের উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি। বুধবারের ঘটনার পর বৃহস্পতিবারে মধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয় তিন মূল অভিযুক্তকে। এরপর শনিবার গ্রেপ্তারের তালিকায় যোগ হয়েছে ওই কলেজের নিরাপত্তারক্ষীও। এদিকে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। একইসঙ্গে এই ঘটনায় গঠন করা হয়েছে স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট।

পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই পাঁচ সদস্যের  টিমকে নেতৃত্ব দেবেন এসিপি প্রদীপ কুমার ঘোষাল। তদন্ত শুরু করে শনিবারই কলেজের নিরাপত্তাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিকে অভিযোগপত্রে তরুণী বলেছিলেন, পালানোর চেষ্টা করলে তাঁকে ওই রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। কলেজের মেন গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। নিরাপত্তাকর্মী সব দেখেও কিছু করেনি। নির্যাতিতার দাবি, অভিযুক্তদের দাপট ছিল কলেজে। সেই কারণে নিরাপত্তারক্ষী কিছু করেননি।

পুলিশকে তরুণী আরও জানান, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক মিটিং শেষে তাঁকে ঘিরে ধরে তিন যুবক। তাঁর অভিযোগ, এদের মধ্যে দুজন তাঁকে একটি ঘরে বন্ধ করে রেখে চলে যান এবং মনোজিত তখন তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ছাত্রীর মেডিক্যাল পরীক্ষাতেও উঠে এসেছে ভয়াবহ ঘটনার প্রমাণ। ছাত্রীর শরীরে পাওয়া গেছে জোর করে যৌনসম্পর্কের চিহ্ন, কামড়ের দাগ এবং নখের আঁচড়।

এদিকে তদন্তে নেমেই এবার কসবা সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় টনার দিন অর্থাৎ, ২৫ জুনের সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন কলকাত পুলিশের শীর্ষ কর্তারা৷ কারণ, ওই কলেজের উপাধ্যক্ষ আগেই জানিয়েছিলেন, কলেজের একাধিক জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে৷ এবার তদন্তে নেমে সেই সমস্ত ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ৷ জানা গিয়েছে, ঘটনার দিনের দুপুর সাড়ে ৩ টে থেকে রাত ১০টা ৫০ পর্যন্ত প্রায় ৭ ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। নির্যাতিতা নিজের অভিযোগ পত্রে বিকেলের পর থেকে ঘটনাক্রম উল্লেখ করেছেন৷ সেই ঘটনাক্রমের সঙ্গে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ মিলিয়ে দেখা হচ্ছে৷

অভিযোগ পত্রে জানিয়েছেন, সন্ধে সাড়ে ৭ টা থেকে রাত ১০টা বেজে ৫০ মিনিট পর্যন্ত প্রথম ইউনিয়ন রুমে ও তারপরে গার্ড রুমে তাঁর উপরে অত্যাচার চালানো হয়৷ ঠিক সেই সময় কারা কলেজে ঢুকেছিল, ঘটনাস্থলের আশেপাশে যাদের দেখা গেছে তাদের প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা৷ এদিকে এদিন অভিযুক্তদের তিনজনের মধ্যে একজনের মোবাইল থেকে নির্যাতিতাকে ধর্ষণের ভিডিও পাওয়া গিয়েছে। এই ভিডিও ধর্ষণ করার সময়কার ভিডিও তুলে রেখেছিল অভিযুক্তেরা। যাতে ঘটনার পরে নির্যাতিতা এই ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকেন অর্থাত্ এক কথায় করা হয়েছিল ব্ল্যাক মেইল।  গত ২৬ জুন অভিযোগ পত্রে নির্যাতিতা স্পষ্ট লিখেওছিলেন এই কথা৷ শুধু তাই নয়, সঙ্গে এও বলা হয়েছিল, এরপর থেকে তাঁকে যখন যেখানে ডাকা হবে, তখন সেখানে পৌঁছে যেতে হবে৷ একটু এদিক থেকে ওদিক হলেই ফাঁস করে দেওয়া হবে সেই ভিডিও৷ এবার অভিযুক্তদের একজনের মোবাইল থেকে সেই ভিডিও উদ্ধার করল পুলিশ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − ten =