‘উষ্ণতম এপ্রিল’। এমন ঘটনা আগে কখনও-ই ঘটেনি, এমনটাই জানাচ্ছে পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস’ (সিসিসিএস)। এই সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২০২৪-এর এপ্রিলকে এই তকমা দেওয়া হয়েছে।
আট বছর আগে, ২০১৬-র এপ্রিল এতদিন বিশ্বের ‘উষ্ণতম এপ্রিল’ হিসেবে চিহ্নিত ছিল। সে বার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই মাসে ৮ দিন ৪০-এর চৌকাঠ পেরোয় কলকাতার তাপমাত্রা। সেই রেকর্ড ভাঙল এবার।
এই প্রসঙ্গে কলকাতার পরিস্থিতি সম্পর্কে ‘সুইচ-অন ফাউন্ডেশন’ জানাচ্ছে, এই একটা মাসে ৯ দিন শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ঘর পেরিয়েছিল।গত ৩০ বছরে কলকাতার ভূপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ৪.৭২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মাত্র পাঁচ বছরের হিসেব কষলেও যে তথ্য উঠে আসছে, সেটাও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সংস্থাটি জানাচ্ছে, ২০১৯-এ এপ্রিলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাঁচ বছর পর, এবার সেটাই বেড়ে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছয়। এই পাঁচ বছরে শহরের রাতের তাপমাত্রাও বেড়েছে ৫ ডিগ্রি। আবহবিদরা জানাচ্ছেন, ব্যাপক হারে গাছ কাটা ও অবৈজ্ঞানিক নগরায়নের ফলে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে তৈরি হয়েছে ‘হিট আইল্যান্ড’। অল্প কিছুটা পরিসরে তাপমাত্রা অত্যধিক বেড়ে যাওয়া এবং দীর্ঘক্ষণ ধরে সেখানে এমনই গরম থাকলে এলাকাকে ‘হিট আইল্যান্ড’ বলা হয়। এমনকী, আগামী এপ্রিলগুলো যে কলকাতার জন্য কোনও ইতিবাচক বার্তা নিয়ে আসবে, এমন আশ্বাসও দিতে পারছেন না কেউ।
এর পাশাপাশি সিসিসিএস-এর তথ্য এও বলছে, ১৮৫০ (টেম্পারেচারের ইনফর্মেশন এই বছর থেকেই রাখা হয়) থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত এপ্রিলের গড় তাপমাত্রার তুলনায় এবারের গড় ১.৫৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। ১৯৯১ থেকে ২০২০ পর্যন্ত এই ৩০ বছরের গড়ের তুলনায় ২০২৩-এর মে থেকে ২০২৪-এর এপ্রিল পর্যন্ত এক বছরের অ্যাভারেজ টেম্পারেচার ০.৭৩ ডিগ্রি বেড়েছে। এটাই এবারের আন্তর্জাতিক অবস্থা।