জল্পনা সত্যিই হল। কংগ্রেস ছাড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিজেপিতে যোগ দিলেন আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী। বৃহস্পতিবার বিজেপি কার্যালয়ে গিয়ে পদ্মপতাকা হাতে তুলে নেন তিনি।
বিজেপিতে যোগ দিয়েই কৌস্তভ বাগচি বলেন, ‘মানুষের চাহিদা পূরণ না করলে তো রাজনীতি করার কোনও অর্থ নেই। যেখানে প্রদেশ কংগ্রেসের গুরুত্ব নেই। সেখানে সে দলের সঙ্গে থাকার কোনও অর্থ নেই। সন্দেশখালি নিয়ে কংগ্রেসের উচ্চ নেতৃত্ব চুপ। আমার মনে হচ্ছে দিনের পর দিন কংগ্রেস যেভাবে তৃণমূল নিয়ে নরম মনোভাব দেখাচ্ছে, সেখানে আত্ম মর্যাদা নিয়ে সেই দলে থাকা যায় না।’ একইসঙ্গে কৌস্তভ এও জানান, ‘সন্দেশখালিকাণ্ডে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পর্যন্ত প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। অথচ কংগ্রেসের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। দলের মধ্যেও এ নিয়ে অসন্তোষের জায়গা আছে। কেউ বলছে কেউ বলছে না। আমার মনে হয় এখানে থাকাটা নিজের আত্মমর্যাদার সঙ্গে সমঝোতা করা। এই তৃণমূলের প্রতি নরম অবস্থান নিয়ে রাজ্যে তৃণমূলকে উৎখাত করা যাবে না।’ সেই লড়াই লড়তেই তিনি বিজেপিতে যোগ দিলেন বলে জানান। এরই পাশাপাশি কৌস্তভ এদিন এও দাবি করেন, তৃণমূল জোট নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য মনোভাব দেখাচ্ছে। কংগ্রেস আদতে তৃণমূলের কাছে ভিক্ষার বাটি নিয়ে ঘোরাফেরা করছে। তৃণমূল বিরোধী মানসিকতার যারা খুব ভালভাবে এটা নেয় না। ফলে তাদের পক্ষে কংগ্রেসে থাকাও সম্ভব নয়। আর এই প্রসঙ্গে কৌস্তভের বক্তব্য, কংগ্রেসের একটা বড় অংশের মানুষ যারা মনে করছে তৃণমূল সরকারকে সরাতে হবে, তাদের সামনে কোনও বিকল্প নেই। ভারত ন্যায় যাত্রার ক্ষেত্রে কংগ্রেস কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নরম মনোভাব দেখিয়েছে বলেও দাবি তাঁর।
প্রসঙ্গত, বুধবারই কংগ্রেস ছাড়েন কৌস্তভ। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে তিন পাতার চিঠি পাঠান তিনি। সেখানেই জানান, কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্য পদ ছাড়ছেন। কংগ্রেসি রাজনীতির সঙ্গে বহুদিন ধরেই যুক্ত কৌস্তভ। তবে ইদানিং দলের সঙ্গে তাঁর একেবারেই বনিবনা হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। বিভিন্ন সময় প্রকাশ্যেই দলের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় মুখর হচ্ছিলেন তিনি। কংগ্রেস ছাড়ার পর থেকেই শোনা যাচ্ছিল এবার বিজেপিতে যোগদানের পালা। সেই জল্পনাই সত্যি হল এদিন। শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদারের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দেন কৌস্তভ। কৌস্তভ ছাড়াও এদিন কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দেন শঙ্কর বন্দোপাধ্যায়, সিদ্ধার্থ মজুমদার। সিদ্ধার্থ মজুমদার গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন। এছাড়াও এদিন বিজেপিতে যোগ দেন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ সৌমিত্র দত্ত।
তবে এদিন বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর জল্পনা শুরু হয় লোকসভা নির্বাচনে তিনি এবার প্রার্থী হচ্ছেন কি না তা নিয়ে। এই বিষয়ে কৌস্তভ স্পষ্ট জানান, ‘কোনও শর্তে আমি দল করি না। চাওয়া পাওয়ার জায়গা নেই। অত্যাচারী শাসকদলকে এ রাজ্য থেকে উৎখাত করতেই যোগদান।’