সাংসদ সুদীপের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে চলেছেন কুণাল

তৃণমূল মুখপাত্র এবং রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে কুণাল ঘোষ আর্জি জানিয়েছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, মুখপাত্রের পদে ইস্তফা গৃহীত হলেও সাধারণ সম্পাদকের পদে ইস্তফা গৃহীত হয়নি। কুণাল ঘোষ শনিবার সন্ধ্যায় এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক পদেও যাতে তাঁর ইস্তফা গ্রহণ করে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। শনিবার এক্স হ্যান্ডলে কুণাল ঘোষ লিখেছেন, ‘আমি তৃণমূলের রাজ্য কমিটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্রের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলাম। খবর পেয়েছি, শুধু মুখপাত্র থেকে ইস্তফার অংশটি গ্রহণ করা হয়েছে। দলের কাছে আমার সবিনয় অনুরোধ, সাধারণ সম্পাদক পদ থেকেও ইস্তফাটি গ্রহণ করা হোক। আমি ওই পদে থাকব না। আমি শুধু কর্মী হিসেবে থাকব।’ এই ঘটনার পরও দলের বর্ষীয়ান সাংসদ সুদীপ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের ওপর ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি কুণালের।

রবিবার ফের সুদীপের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা যায় তাঁকে। শুধু তাই নয়, টেনে আনেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষের প্রসঙ্গও। সজল আগে তৃণমূলে ছিলেন। পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। এ প্রসঙ্গে কুণাল জানান, ‘সজলকে দলে রাখার জন্য আমি শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেছিলাম। সুদীপদারা সেটা হতে দেননি।’ এরই রেশ ধরে সুদীপকে তাঁর সরাসরি আক্রমণ, ‘আপনি এত বড় নেতা, আপনি সজলকে দলে থাকতে দেবেন না। আবার সজল উল্টো দিকে দাঁড়ালে আপনি এবং আপনার স্ত্রী তাঁকে হারাতেও পারবেন না।’ শুধু তাই নয়, বিভিন্ন ওয়ার্ডে সুদীপরা বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে রেখেছেন বলে দাবি করেন কুণাল। কুণালের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির সজল ঘোষ জানান, ‘কুণাল সকাল থেকে রাত অবধি মিথ্যা বলেন। তবে এই দু’টি কথা উনি সত্যি বলেছেন। উনিই আমাকে দলে রাখার জন্য শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেছিলেন। সুদীপ কাউকে কোনও কাজ করতে দেন না। তবে তৃণমূল এখন আমার কাছে অতীত। আমি ওই দলকে ঘৃণা করি। যা হয় ভালর জন্যই হয়। আমি যে ওই দল থেকে বেরিয়ে এসেছি, তার জন্য সুদীপকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত থেকে সমাজমাধ্যমে ইঙ্গিতবাহী পোস্ট করছিলেন কুণাল। দলের এক নেতাকে নাম না করে আক্রমণ করেন তিনি। এরপর শুক্রবার সকালে নজরে আসে  এক্স হ্যান্ডলের বায়ো থেকে কুণাল তৃণমূলের মুখপাত্র এবং রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পরিচয় মুছে ফেলেছেন। জল্পনা আরও জোরদার হতে কুণাল স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে বুঝিয়ে দেন, তাঁর ক্ষোভ কাকে নিয়ে। রোজ়ভ্যালিকাণ্ডের উল্লেখ করে সুদীপকে আক্রমণ করেন তিনি। এমনকি কুণাল এও দাবি করেন,  দাবি করেন, সুদীপ আসলে ‘বিজেপির লোক’। এমনকি, শনিবারের একটি পোস্টে সুদীপের সঙ্গে কয়লা কেলেঙ্কারির যোগের ইঙ্গিতও দেন কুণাল। জানিয়েছেন, যদি তা প্রমাণিত হয়, তবে সুদীপকে গ্রেফতার করা দরকার। কেন্দ্রীয় সংস্থা তা এড়িয়ে গেলে আদালতে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন কুণাল।

এদিকে তৃণমূল সূত্রে খবর, গত তিন চারদিনে কুণালের গতিবিধি নিয়ে দল পদক্ষেপ করতে চলেছে। এমনও শোনা যাচ্ছে, শোকজ করা হতে পারে কুণালকে। এ প্রসঙ্গে রবিবার কুণাল জানান, ‘আমাকে যদি শোকজ করা হয়, তা প্রেমপত্রের মতো গ্রহণ করব।’ এরই পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, ‘আমাকে বস্তায় বেঁধে বার না করে দিলে কুণাল ঘোষ তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে কোথাও যাবে না। কুণাল ঘোষ বেইমান নয়।’

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − sixteen =