এবার শারীর শিক্ষা ও কর্মশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে দেখা গেল তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে। শনিবার দুপুরে চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এই বৈঠকের আগে অবশ্য এই চাকরিপ্রার্থীরা কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান। এরপর যান কুণাল ঘোষের সুকিয়া স্ট্রিটের বাড়িতেও। তবে সেদিন কুণালের সঙ্গে দেখা হয়নি। বাড়িতে ছিলেন না তিনি। এরপরই শনিবার ফের তাঁরা শরনাপন্ন হন তৃণমূলের এই মুখপাত্রের।
শারীর শিক্ষা ও কর্মশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীরা জানান, ২০১৬ সালের পরীক্ষার্থী তাঁরা। এসএসসি যুব ছাত্র মঞ্চের ব্যানারে পথে বসেছেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যেই ১৫ থেকে ১৬ জনের একটি প্রতিনিধিদল এদিন কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের একটাই দাবি, নিয়োগ হোক দ্রুততার সঙ্গে। আর তার জন্য যা যা করা দরকার, তা সরকার করুক।
এখানে বল্ রাখা শ্রেয়, কুণাল ঘোষ এর আগেও এভাবে বৈঠক করেছেন চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে। রাসমণি পাত্ররা যেদিন মাথা কামিয়ে ন্যাড়া হয়ে প্রতিবাদ জানান সেদিন ধরনামঞ্চেও যেতে দেখা যায় তৃণমূলের এই মুখপাত্রকে। চাকরি প্রার্থীরা যখন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন, বারবারই কুণাল ঘোষকে দেখা গিয়েছে চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে এক সারিতে বসতে।শুধু তাই নয়, তিনি নিজেদের চাকরি প্রার্থীদের প্রতিনিধি হিসাবেও দাবি করেছেন।
চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর রাজ্যসভার সিপিএম সাংসদ ও আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করতে দেখা যায় কুণালকে। তৃণমূল নেতার দাবি, আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে এই চাকরিপ্রার্থীরা নিয়োগ পাচ্ছেন না। অন্যদিকে আইনজীবীদের একাংশ চাকরিপ্রার্থীদের ‘ভুয়ো সমবেদনা’ দেখিয়ে চাকরি আটকানোর জন্য আদালতে ছুটছেন বলে দাবি তৃণমূল মুখপাত্রের। একইসঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের সহযোগিতার বার্তা দিয়েছেন কুণাল।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল নেতা বলেন, ‘সুপারিশপত্র থাকা সত্ত্বেও এই চাকরিপ্রার্থীরা নিয়োগপত্র পাচ্ছেন না। আইনি জটিলতা রয়েছে, কারণ নিয়োগের ক্ষেত্রে আদালতের স্থগিতাদেশ রয়েছে। এক শ্রেণির আইনজীবী চাকরিপ্রার্থীদের সর্বনাশ করছেন। মিথ্যে সমবেদনার নাম করে এদের মামলা লড়ার পরামর্শ দিচ্ছেন, অন্যদিকে বিরুদ্ধে পক্ষের হয়ে মামলা লড়ছেন। চাকরিপ্রার্থীরা আমাকে আবেদন জানিয়েছিলেন, তাই ধরনা মঞ্চে গিয়েছিলাম। ওঁদের দাবির কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে উদ্যোগে ওঁরা সুপারিশপত্র পেয়েছেন। কিন্তু মামলা করে নিয়োগের পথে বাধা তৈরি করা হচ্ছে।’
এরপরই তৃণমূল নেতার দাবি, ‘রাজনীতি করার জন্য উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। বলতে বাধ্য হচ্ছি, বিকাশ ভট্টাচার্য ও তাঁর সঙ্গী আইনজীবীরা মামলা লড়ার জন্য এই যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের থেকে ২৭ লাখ টাকা নিয়েছেন। এই তিনি গরিবের নেতা! এখন অযোগ্যপ্রার্থীদের দিয়ে মামলা করিয়ে যোগ্যদের চাকরি আটকে রেখেছেন। ওঁরা আমাকে অনুরোধ করেছেন হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ তোলার জন্য রাজ্য সরকার যেন ব্যবস্থা করেন। আমি সংশ্লিষ্ট জায়গায় বিষয়টি পৌঁছে দেব।’ এরপরই বিকাশরঞ্জনকে উদ্দেস্য করে তিনি জানান, ‘দয়া করে এদের রাজনীতির জন্য ব্যবহার করবেন না।’