আগামী একুশে জুলাই ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শহিদ দিবসের ভাষণ দেবেন ৷ ঠিক তখনই সেই সভামঞ্চ থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে, ধর্মতলার শহিদ মিনারের মঞ্চে রাজ্যের মেধা ও শ্রমের ‘শহিদ দিবস‘ পালন করবে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ ৷ শনিবার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের শাসক দলকে এমনই এক বার্তা দিতে শোনা গেল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষকে। একইসঙ্গে রাজ্য সরকারকে স্পষ্ট হুঁশিয়ারির সুরে দিয়ে রাখলেন, ২৮ জুলাই ডিএ–সহ একাধিক দাবিতে ‘নবান্ন চলো‘ অভিযানের ডাকের মধ্য দিয়ে.
শুধু মাত্র রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি শূন্যপদে নিয়োগ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ডিএ মেটানো এবার সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ইস্যু যে থাকছে তা নয়, এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে আরজি করের চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুন এবং দক্ষিণ কলতারা ল‘ কলেজে ছাত্রীর গণধর্ষণের ঘটনাও। এইসবের প্রতিবাদে ২৮ জুলাই নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ ৷ ওই দিন ডিএ–র দাবিতে আন্দোলনকারী একাংশ সরকারি কর্মচারিদের এই সংগঠনের পাশাপাশি, চাকরিহারা শিক্ষক, চাকরিপ্রার্থী ও সরকারি চাকরিজীবীদের মঞ্চগুলিও সামিল হবে বলে সূত্রে খবর ৷
শনিবার তাঁদের পরবর্তী কর্মসূচি জানাতে গিয়ে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘আগামী একুশে জুলাই সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ এবং অন্যান্য সব মঞ্চ মিলে বাংলার মেধা ও শ্রমের শহিদ দিবস পালন করব ৷ সেই সঙ্গে ২৮ জুলাই নবান্ন চলোর ডাক দিচ্ছি ৷ আমরা এরাজ্যের সেইসব মানুষকে এই অভিযানে সামিল হতে বলছি, যাঁরা মনে করেন, এই সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির জন্য আপনারাও বঞ্চিত হচ্ছেন ৷ এই মুহূর্তে মোট ১২টি মঞ্চ এক হয়েছি ৷ এরপর আরও মঞ্চ যুক্ত হবে ৷’
এর পাশাাপশি ২১ জুলাই সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের শহিদ দিবস প্রসঙ্গে তিনি এও জানান, ‘আমাদের শহিদ দিবস পালনের জন্য অনুমতির প্রয়োজন নেই ৷ আমরা কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে যে প্রতিবাদ মঞ্চ তৈরি করেছি, সেখানেই পুরো কর্মসূচি পালন করা হবে ৷ আর শাসকদল যে শহিদ দিবস পালন করে, আমরা তার উলটো দিকে দাঁড়িয়ে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির কারণে এরাজ্যের মেধা ও শ্রমের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছি ৷ আমরা তারই প্রতিবাদে মেধা ও শ্রমের শহিদ দিবস পালন করব ৷’
একইসঙ্গে শনিবারের এই সাংবাদিক বৈঠক থেকে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে একগুচ্ছ দাবিও তোলা হয় ৷ এগুলিই মূলত ২৮ জুলাই ‘নবান্ন চলো‘ কর্মসূচির মূল দাবি হতে চলেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কারবারিরা ৷ এদিন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফ থেকে বিভিন্ন সরকারি দফতরে রাজ্যজুড়ে ৬ লক্ষ শূন্যপদে স্বচ্ছ নিয়োগের দাবি জানানো হয় ৷ পাশাপাশি, দুর্নীতির কারণে যাঁরা চাকরি পায়নি, তাঁদের চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে ৷ সেই সঙ্গে চাকরিহারা ‘যোগ্য‘ শিক্ষকদের কাজে ফেরানো, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে দেড় লক্ষ শূন্যপদে নিয়োগের মতো, দাবি তোলা হয়েছে ৷