কসবার ডিআই অফিসে চাকরিহারাদের অভিযানে লাঠিচার্জের ঘটনায় ইতিমধ্যে একাধিক ভিডিও সামনে এনেছে পুলিশ। এরপরই পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হয়,তাঁদের ওপর হামলা হওয়ায় আত্মরক্ষার স্বার্থে তাঁরা ‘সামান্য’ বলপ্রয়োগ করেন। শুক্রবার ফের সাংবাদিক বৈঠক করে নতুন কিছু ভিডিও দেখাল পুলিশ। এরপরই আরও দাবি করা হয়,চাকরিহারাদের একাংশ পুলিশকেই হেনস্থা করেছেন এবং সেখানে কিছু বহিরাগতও ছিল।
বুধবার চাকরির দাবিতে কসবার ডিআই অফিসে ভিড় জমান চাকরিহারারা। কিন্তু আগে থেকেই অফিসের গেটে তালা লাগানো ছিল। বাইরে ছিল কড়া পুলিশি নিরাপত্তা, ছিল ব্যারিকেডও। পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, চাকরিহারারা সেই ব্যারিকেড সরিয়ে, গেট টপকানোর চেষ্টা করেন, তালাও ভাঙেন। এই সময়ে কোনও পুলিশ তাঁদের ওপর বলপ্রয়োগ করেননি। কিন্তু ধীরে ধীরে চাকরিহারারা পুলিশের ওপরই আক্রমণ করা শুরু করেন। হেনস্থা করা হয় একাধিক অফিসারকে, তাঁদের মধ্যে মহিলা অফিসারও ছিলেন। তখনই পাল্টা বলপ্রয়োগ করতে বাধ্য হয় পুলিশ।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে একাধিক ভিডিও দেখান জয়েন্ট কমিশনার অফ পুলিশ রূপেশ কুমার। তা দেখিয়ে বলা হয়, বারংবার শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখানোর জন্য আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের একাংশ ভাঙচুরের চেষ্টা করেন। শুধু তাই নয়, পেট্রোল দিয়ে জ্বালানোর কথাও বলা হয়। গার্ডরেল, মেন গেট টপকানোর পরও পুলিশ চাকরিহারাদের ওপর বলপ্রয়োগ করেনি। কিন্তু ভিতরে ঢুকে তাঁরা ওপরে উঠতে যাচ্ছিলেন পুলিশকে হেনস্থা করে। সেই সময়ই আত্মরক্ষার স্বার্থে বাধ্য হয় পুলিশ লাঠিচার্জ করতে।
পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা জানান, এই ঘটনায় ১৩ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া তাঁরা বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করেছেন যারা চাকরিহারা শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী নন। অর্থাৎ বাইরের লোক ঢুকেছিলেন ওই জমায়েতে। যদিও সাংবাদিক বৈঠকে কারও নাম বলতে চাননি কমিশনার। তাঁর বক্তব্য, তদন্ত চলছে। ঠিক সময়ে তাঁদের নাম প্রকাশ্যে আনা হবে এবং গ্রেফতারও করা হতে পারে।
চাকরিহারারা যে ডিআই অফিস অভিযান করবেন তা পুলিশ আগে থেকেই জানত। তাহলে কি সেদিন পুলিশি নিরাপত্তায় কোনও ঘাটতি ছিল? এই প্রশ্নের উত্তর পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘শিক্ষকদের কর্মসূচি ছিল। সেখানে এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে তা কেউই ভাবেনি। কারও মাথায় আসবে না যে শিক্ষকরা পুলিশের ওপর আক্রমণ করতে পারেন। তাই শিক্ষকদের কোনও কর্মসূচিতে যেমন ব্যবস্থা করা হয়, তেমনই হয়েছিল।’ যে সমস্ত পুলিশ আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে কমিশনার এও বলেন, শিক্ষকরা পুলিশকে মারবেন এটাও মেনে নেওয়া যায় না। কেউ কিন্তু এই বিষয়টাও দেখছেন না যে কোন পুলিশ কর্মী কতটা আহত হয়েছেন। সেটাও দেখা উচিত।