শ্লীলতাহানির মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে। বরাহনগর থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের হয়েছে। তবে সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ উড়িয়ে বামনেতা জানান, ‘যা ঘটেইনি তা নিয়ে কী বলব।’ শুধু তাই নয়, একইসঙ্গে তুলে দিলেন একাধিক প্রশ্নও।
তন্ময় এদিন যে প্রশ্ন সামনে আনেন তাতে প্রধান যে ব্যাপারটি নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই তা হল, ‘এই ভদ্রমহিলার সঙ্গে ক্যামেরাম্যান ছিল। ক্যামেরা অন ছিল না কেন? এই ঘটনার সময় ক্যামেরা অন হল না কেন? একটা তো বোতাম টিপতে হয়! অথবা ক্যামেরা ম্যান আমায় ধাক্কা মারলেন না কেন? দরজা–জানালা খোলা ছিল। মেয়েটিই বা চিৎকার করল না কেন? ট্রমাটাইজ অবস্থায় থানায় গেলেন না? রাতে অভিযোগ করলেন কেন?’
এখানেই শেষ নয়, এ দিন সিপিএম নেতা আগত সাংবাদিকদের প্রথমে প্রশ্ন করেন, ‘ওঁকে আপনারা দেখেছেন তো? ভদ্রমহিলার ওজন ৪০ কেজির বেশি নয়। আমার ওজন ৮৩ কেজি। এবার ভাবুন ৮৩ কেজির ওজনের মানুষ একজন ৪০ কেজি ভদ্র মহিলার উপর বসে পড়েন তাহলে সেই মহিলা শারীরিক দিক থেকে ফিট থাকেন? জানি না। সবপূর্ণ পরিকল্পিত কুৎসা।’
এরই পাশাপাশি তন্ময়বাবু এদিন এও জানান, রবিবার ইন্টারভিউ নেওয়ার পর মহিলা সাংবাদিক আরও কয়েকজনের সাক্ষাৎকার নেবেন বলেও তাঁকে জানান। এমনকী সেই সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য কী কী প্রশ্ন করা যেতে পারে সেই সাজেশনও নেন বামনেতার থেকে। এখানেই তন্ময় ভট্টাচার্যের প্রশ্ন, ‘একজন ট্রমাটাইজ মেয়ে এত সব কিছুর পর কেন রাত্রিবেলা থানায় গেলেন? সঙ্গে–সঙ্গেই তো পুলিশ স্টেশনে যেতে পারতেন।’ আরজি কর থেকে নজর ঘোরাতে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে না তো? সেই প্রশ্নও তুলে দিলেন বাম নেতা। একইসঙ্গে এও জানান, ‘কমপক্ষে পনেরো বার উনি আমার বাড়িতে এসেছেন। আমার স্ত্রী ঘরে আছেন,বড় বৌদি ঘরে আছে আমার পরিবারের প্রতিটি সদস্য তাঁকে চেনেন।’ একই সঙ্গে সংযোজন করে বলেন, ‘ আমাদের বাড়িতে চা বেশি খাওয়া হয়। যে সাংবাদিকই বাড়িতে এসেছেন বিশেষ করে যাকে তুই করে বলি,এই ভদ্রমহিলাকে তুই করেই বলতাম এরপর আপনি করে বলব। যে যখন এসেছে তাঁকেই জিজ্ঞাসা করেছি চা খাবে কি না।’
তবে সোমবার কার্যত নিস্তেজ দেখায় এই বাম নেতাকে। উত্তর দিলেন অনেকটা সাবধানীভাবে। এমনকী নিগৃহীতা সাংবাদিককে প্রথমে ‘মেয়েটি’ বলে সম্বোধন করেও পরে ক্ষমা চেয়ে বলেন ‘ভদ্র মহিলা’।অর্থাৎ কথা বলার ক্ষেত্রেও একটু সাবধানী হতে দেখা গেল বাম নেতাকে। এ দিন তিনি এও বলেন, “আমি বরাবরই ওকে তুই করে বলতাম। কুড়ি একুশের বাচ্চা মেয়ে তুই ছাড়া কী বলব।” তবে এবার থেকে যে আরও সাবধানী হবে সে কথাও বারবার বলে বুঝিয়ে দিলেন বাম নেতা।