তৃণমূল- কংগ্রেস জোট হলে সরছে বাম, বার্তা সেলিমের

তবে কি শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের সঙ্গেই বাংলায় আসন ভাগাভাগি করতে চলেছে প্রদেশ কংগ্রেস, এই প্রশ্নই এখন হট টপিক বঙ্গ রাজনীতিতে। ঘটনা পরম্পরা যে পথে এগোচ্ছে, তাতেই তৈরি হয়েছে এই জল্পনা। অন্তত সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম যা বলছেন তাতে তারই ইঙ্গিত মিলছে। ফলে যে প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে তা হল, কংগ্রেস যদি তৃণমূলের সঙ্গে আসন বোঝাপড়ার দিকে এগোয়, তাহলে বামেদের অবস্থান কী হবে? প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে কি বন্ধুত্ব অটুট রাখবেন লাল পতাকার ধারক-বাহকরা?

এতো সব আলোচনার মধ্যে বামেদের অবস্থান কী হতে চলেছে, এবার তার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বামেদের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন করতেই সটান জবাব, ‘অবস্থান একদম স্পষ্ট আছে।’ এবার প্রশ্ন কী এই স্পষ্ট অবস্থান?

সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের সাফ কথা, ‘বিজেপি ও তৃণমূলের সঙ্গে যাদের সংশ্রব থাকবে না, তাদের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব হবে। যারাই বিজেপি ও তৃণমূলের সম্পর্কে দুর্বলতা দেখাবে, তাদের থেকে শত-সহস্র যোজন দূরে আমাদের অবস্থান হবে।’ অর্থাৎ এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, কংগ্রেস দুই নৌকায় পা দিয়ে চলতে পারবে না। যদি তৃণমূলের সঙ্গে বন্ধুত্বের পথে এগোয়, তাহলে যে বামেদের থেকে দূরত্ব তৈরি হতে পারে, ঠারেঠোরে সেই প্রচ্ছন্ন সাবধানবাণীও দিয়ে রাখলেন কংগ্রেসকে।

মহম্মদ সেলিম এদিন আবারও বিজেপি ও তৃণমূলের ‘আঁতাতের’ তত্ত্ব উসকে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘বিজেপি ও তৃণমূল পরস্পর মুখোমুখি হয়ে বাক-বিতণ্ডা করতে পারে। কিন্তু সংসদের মধ্যে, সংসদের বাইরে, দুর্নীতি-অন্যায়-সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে তাদের নীতিগত ও রাজনৈতিক অবস্থান একমুখী। দুটিই আরএসএস পরিচালিত সংগঠন। সেই জন্য বিজেপি ও তৃণমূল উভয়ের বিরুদ্ধেই ইন্ডিয়া ও বাংলা লড়বে।’

উল্লেখ্য, রাজনৈতিক দলগুলির কাছে এখন পাখির চোখ লোকসভা ভোট। বিজেপিকে হারাতে কোমর বাঁধছে বিরোধীদের ইন্ডিয়া জোট। চলছে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনার পর্ব। সূত্রের খবর, দিল্লির বৈঠকে কংগ্রেসকে বাংলায় দু’টি আসন ছাড়তে রাজি হয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে আবার দক্ষিণ মালদার বর্ষীয়ান সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরীও আসন সমঝোতা নিয়ে একইরকম দাবি করেছেন। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের কাছে আরও কয়েকটি আসনের দাবি জানানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এসবের মধ্যেই বৃহস্পতিবার সেলিম জানান, ‘কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত কংগ্রেস নেবে। কিন্তু বাংলার কংগ্রেস নেতা-কর্মী-সমর্থকদের বলবো, কেউ দেখে শেখে, কেউ ঠেকে শেখে। বাংলার কংগ্রেস ঠেকে শিখেছে।’

এরই পাশাপাশি সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘কোন মুখে কংগ্রেস তৃণমূলের সঙ্গে বন্ধুত্বের পথে যাবে, সেটাও আমাদের দেখার দরকার।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen + eleven =