দেখব কতগুলো ডিটেনশন ক্যাম্পে আমাকে নিয়ে যেতে পারেনঃ মমতা

ভিনরাজ্যে বাঙালি হেনস্থার প্রতিবাদে তৃণমূলের সেকেন্ডইনকমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বুধবার রাজপথে নামেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন দলের একাধিক নেতামন্ত্রী। বাংলার যে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ভিনরাজ্যে কাজ করেন, তাঁদের ফিরে আসার অনুরোধ করেন মমতা। তাঁর ভাষায়, ‘আপনারা ফিরে আসুন। যদি আমার কাছে একটা রুটি থাকে, আপনাকে অর্ধেক দিয়ে দেব। ওখানে অসম্মানে থাকবেন না।এর পাশাপাশি তৃণমূল সুপ্রিমো এও জানান, ‘যত স্বাধীনতা সংগ্রামীরা রয়েছেন, তাঁদের নামের মধ্যে ৭০ শতাংশ বাংলার লোক আছেন। যাঁরা বাংলা ভাষায় কথা বলেন। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন পঞ্জাবিরা। যাঁরা দেশ স্বাধীন করেছেন, যাঁরা জাতীয় সঙ্গীত দিয়েছেন, যাঁরা জনগণমন অধিনায়ক গেয়েছেন, যাঁরা জয় হিন্দ স্লোগান দিয়েছেন, আজ তাঁদের উপর অত্যাচার? আজ এনআরসির নামে তাঁদের বাদ দেওয়া হচ্ছে?’ এখানেই শেষ নয়, এর পাশাপাশি  মমতা  এও জানান,  নদিয়ার বাংলাভাষীদের ছাড়াতে মহুয়া মৈত্র সেখানে গিয়েছেন।দিল্লিতেও হেনস্থার শিকার বাঙালিদের নিয়ে ৪৮ঘণ্টা ধর্নায় বসেছেন তৃণমূলের সাংসদেরা। এর পাশাপাশি কোচবিহারের বাসিন্দাদের অসম সরকার নোটিস পাঠানোর ঘটনায় কেন্দ্রকে বিদ্ধ করে তাঁর প্রশ্ন, কোন অধিকারে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে তাঁরা।

ভিনরাজ্যে কেন অত্যাচারিত বাঙালিরা এই প্রশ্ন তুলে এদিন মিছিল শেষে মঞ্চ থেকে ফের একবার কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর এই ইস্যুতেই তৃণমূল সুপ্রিমোর চ্যালেঞ্জ, ‘ভারত সরকার একটা নোটিফিকেশন করেছে লুকিয়ে লুকিয়ে করেছে চ্যালেঞ্জ করব। তাতে পরিষ্কার বলা হয়েছে যাকেই সন্দেহ হবে বাংলা ভাষায় কথা বললে তাকে গ্রেফতার করবে তারপর ডিটেন্টেশন ক্যাম্পে রাখবে।এরই রেশ টেনে তৃণমূল সুপ্রিমো এও জানান, ‘আমরা সব ভাষাকে সম্মান জানাই। এর মানে এটা হয় না যে আপনারা বাঙালির উপর অত্যাচার করবেন, এটা হতে পারে না। আমরা বাঙালির উপর অত্যাচার করতে দেব না।’ এরপরই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে কেন্দ্রের কাছে তাঁর জবাবদিহি, ‘আপনারা কী ভেবেছেন? বাংলা ভাষায় কথা বললে রোহিঙ্গা বলে দেবেন?’

এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘ওদের কাছে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড আছে। ওদের স্কিল আছে তাই ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ২২ লক্ষ আমার বাংলার শ্রমিক, গরিব লোকগুলো যায় তাদের অনেক কষ্ট করতে হয়। তাদের দিয়ে কাজ করাবে আর বাংলা ভাষায় কথা বললে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাবে? কেন বাংলা ভারতবর্ষের মধ্যে নয়?’ এই প্রসঙ্গে এদিন মমতা সামনে আনেন মহারাষ্ট্র প্রসঙ্গও। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মহারাষ্ট্র যখন হিন্দিভাষীদের তাড়িয়ে দিয়েছিল, তখন আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। আমরা সবাইকে সম্মান করি। বাঙালিদের উপর আপনাদের এতো রাগ কেন? কী করেছে বাঙালিরা আপনাদের?’

এরপরই মমতা স্পষ্ট হুঁশিয়ারির সুরে জানান, ‘ আমি বাংলায় কাজ করি। বাংলার লোকে আমাকে বেছে নিয়েছেন। আমাকে বাংলায় কাজ করতে দিন। বাংলায় আমার সমস্যা করলে আমি গোটা ভারতে ঘুরব। আমাকে আপনারা আটকে রাখতে পারবেন না। আমি দেখব কতগুলো ডিটেনশন ক্যাম্পে আমাকে নিয়ে যেতে পারেন। সেখানে গিয়েও আমি বাংলাতেই কথা বলব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × three =