প্রবল বৃষ্টিতে ভাসছে মহারাষ্ট্র

প্রবল বৃষ্টিতে ভাসছে মহারাষ্ট্র। এরমধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পুনে এবং মুম্বইয়ের। পুনেতে ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন চার জন। মুম্বইয়ের বিস্তীর্ণ অংশ জলের তলায়। বিপর্যস্ত ট্রেন এবং উড়ান পরিষেবা। এদিকে, মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং হড়পা বানে বিধ্বস্ত হিমাচলপ্রদেশও। গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন পুনে এবং কোলাপুরের বেশ কিছু এলাকা। বৃহস্পতিবার ভোরে ডেকান জিমখানার কাছে জমা জলে ভেসে যেতে দেখা যায় একটি ঠেলাগাড়িকে। ওই ঠেলাগাড়িতেই ছিল তিনজনের দোকান। ঠেলাগাড়িটি বাঁচাতে গিয়ে তড়িদাহত হয়ে মারা যান অভিষেক ঘানেকর, আকাশ মানে এবং শিব পরিহার। অন্যদিকে, মাভাল তেহশিলের আদরওয়াড়ি গ্রামে ধস নেমে প্রাণ গিয়েছে এক জনের। পুনের একাধিক এলাকায় জল কোমরেরও উপরে। মুঠা নদীর উপর ব্রিজ অর্ধেক ডুবে গিয়েছে। পরিস্থিতি এমনই, উদ্ধারকাজের জন্য জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী অর্থাৎ এনডিআরএফ-এর তিনটি টিম পাঠানো হয়েছে। পুনে এবং সংলগ্ন অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে ভারতীয় বায়ুসেনা এবং সেনাকে খবর দেওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের নির্দেশ দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে।

উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার সরকারি অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন। পুনে শহর এবং অধিকাংশ এলাকায় স্কুল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষকে বাড়ি থেকে বেরোতে নিষেধ করেছে প্রশাসন।

এদিকে, মুম্বইয়ে শুক্রবার পর্যন্ত বৃষ্টির হলুদ সতর্কতা জারি রয়েছে, অর্থাৎ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা। প্রবল বৃষ্টির জেরে একাধিক উড়ান বাতিল হয়েছে। বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে ফ্লাইটের স্টেটাস চেক করতে প্যাসেঞ্জারদের অনুরোধ করেছে ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া এবং স্পাইসজেটের মতো বিমানসংস্থা।

বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন জানিয়েছে, যে সাতটি লেক থেকে মুম্বইয়ে জলের সরবরাহ আসে, তার মধ্যে চারটি— তানসা, তুলসি, মোদক-সাগর এবং বিহার লেক ইতিমধ্যেই উপচে গিয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ঠানের বরভি ড্যামে ঢুকে প্রবল জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছেন দু’জন। তাঁদের খোঁজ চলছে। প্রবল বৃষ্টির মধ্যে তাঁরা কী ভাবে বাঁধের মধ্যে পৌঁছলেন, খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাও।

মহারাষ্ট্রের চারটি নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে, ফলে বাড়ছে চিন্তা। এর মধ্যে বান্দ্রা-কুরলা কমপ্লেক্সের বিজনেস হাবের কাছে মিঠি নদীতে কুমির দেখা দেওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মুম্বইয়ে এনডিআরএফ-এর পাঁচটি টিম, নাগপুরে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলার চারটি টিম এবং ধুলেতে তিনটি টিম নামানো হয়েছে। ঠানেতে প্রবল বৃষ্টিতে জারি হয়েছে কমলা সতর্কতা।

এর মধ্যে হিমাচল প্রদেশের কুলুতে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে হড়পা বান নেমে বন্ধ তিন নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ। তবে প্রাণহানির কোনও খবর মেলেনি। মান্ডির ১২টি রাস্তা, কিন্নৌরের দু’টি এবং কাংড়ার একটি রাস্তা বৃষ্টি-ধসের কারণে বন্ধ। গোয়াতেও ২৭ জুলাই পর্যন্ত প্রবল বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 4 =