রাজস্থানের দলীয় জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফের বিদ্ধ করলেন জোটকে। বিরোধীদের এই নিশানা করতে গিয়েই তুলে ধরলেন মহাত্মা গান্ধির ‘কুইট ইন্ডিয়া’ স্লোগানকে। বৃহস্পতির দুপুরে শেখাবতী অঞ্চলের সীকরে আয়োজিত ওই জনসভায় নিষিদ্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী ‘সিমি’-কে সামনে আনেন প্রধানমন্ত্রী। তুলে ধরেন স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া-র কথাও। মনে করিয়ে দেন, ১০ মাস আগে তাঁর সরকার ‘বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন’ (ইউএপিএ)-এ যে ‘পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া’ বা পিএফআই-কে নিশানা করেছে, সিমি তারই পূর্বসুরি। দু’ক্ষেত্রেই ‘ইন্ডিয়া’ নাম রয়েছে জানিয়ে মোদির মন্তব্য ‘বিরোধী জোটের নামের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে পাপ।’ কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের আমলে ভারতের উপর হামলা চালানোর জন্যই ওই সংগঠন তৈরি হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিজেপির সভায় মণিপুর প্রসঙ্গে কিছু না বললেও কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে মহিলাদের উপর নির্যাতনের ঘটনা, গোষ্ঠীহিংসা, দুর্নীতি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন মোদি। রাজস্থানের মা-বোনেদের সম্ভ্রম রক্ষায় রাজস্থানের কংগ্রেস সরকার কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। এর পাশাপাশি নয়া বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ সম্পর্কে মোদির বক্তব্য,‘জালিয়াতির দায়ে বদনাম হয়ে যাওয়া কোম্পানি যেমন নাম বদলে ফেলে, তেমনই নানা দুর্নীতি অভিযুক্ত ইউপিএ নাম বদলেছে। দুর্নীতি আর প্রতারণার ইতিহাস আড়াল করতেই বদলানো হয়েছে নাম।’ দেশবিরোধী শক্তি যে কৌশলে ভারতকে দুর্বল করতে চায়, ‘ইন্ডিয়া’-ও সেই কৌশল নিচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে আবার ব্রিটিশ ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’র প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘ এই বিরোধীরাই গালওয়ানে শহিদ ভারতীয় সেনার শৌর্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’-এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন।’
এরই পাশাপাশি সত্তরের দশকে কংগ্রেসের স্লোগান ‘ইন্দিরা ইজ ইন্ডিয়া’-কেও কটাক্ষ করেন তিনি। সেই সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামে গান্ধির স্লোগানকে সামনে এনে বলেন, ‘দুর্নীতি ‘কুইট ইন্ডিয়া’, পরিবারতন্ত্র ‘কুইট ইন্ডিয়া’, তোষণের রাজনীতি ‘কুইট ইন্ডিয়া’। মহাত্মা গান্ধির ‘কুইট ইন্ডিয়া’ স্লোগানই ভারতকে বাঁচাতে পারে।’
এদিনের এই সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন অশোক গেহলট সরকারকে ‘লুট কি দুকান’ এবং ‘ঝুট কা বাজার’ বলে আক্রমণ করতেও দেখা যায়। রাজ্যের উন্নয়ন কংগ্রেস স্তব্ধ করে রেখেছে বলেও মুখ্যমন্ত্রী গেহলটের আরোগ্য কামনা করেন মোদি। মঞ্চেই তিনি বলেন, হাঁটুতে জখম পেয়েছেন প্রবীণ নেতা। সেই কারণেই সরকারি এই অনুষ্ঠানে থাকতে পারেননি। কয়েকদিন ধরেই তিনি অসুস্থ। আমি তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।