আধুনিক যুদ্ধে বড়ধরনের পরিবর্তন আসছে, জানালেন সিডিএস অনিল চৌহান

‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে  অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন দেশের  চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান। তিনি এই অপারেশন সম্পর্কে জানান, এটি একটি ‘সংঘর্ষহীন’ যুদ্ধ ছিল। এর সঙ্গে , তিনি ভবিষ্যতের যুদ্ধগুলি কেমন হতে পারে তার একটি ইঙ্গিতও দেন।
প্রসঙ্গত, সিঙ্গাপুরে শাংরি-লা সংলাপে সিডিএস বক্তব্য রাখতে গিয়ে  উদীয়মান ভূ-রাজনৈতিক গতিশীলতা এবং দ্রুত প্রযুক্তিগত পরিবর্তনগুলি তুলে ধরেন। এই পরিবর্তনগুলি যুদ্ধের প্রকৃতির এক নতুন  সংজ্ঞা লিখছে বলেও জানান। সঙ্গে প্রত্যয়ের সঙ্গে এও জানান,  প্রযুক্তির সহজ প্রাপ্যতা নন স্টেট  শক্তিগুলিকে শক্তিশালী করেছে, যা প্রক্সি যুদ্ধ এবং অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে।
এর পাশাপাশি জেনারেল চৌহান পাকিস্তানকে বার্তা দিতে গিয়ে বলেন যে, ‘আমরা দুই দশক ধরে এই প্রক্সি যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছি এবং আমরা অনেক মানুষকে হারিয়েছি। আমরা এটার অবসান চাই।’ এরই রেশ টেনে তিনি এও জানান,’আধুনিক যুদ্ধে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। এই পরিবর্তনগুলি কৌশল এবং ক্ষেত্র যেমন স্থল-বাতাস, সমুদ্র, সাইবার এবং স্থান, সময়সীমা, কৌশলের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই পরিবর্তনগুলি এখন যুদ্ধের স্থির প্ল্যাটফর্ম থেকে দূরে নমনীয়, প্রতারণামূলক কৌশলের দাবি করে।’ একইসঙ্গে সিডিএস অনিল চৌহান এও জানাতে ভোলেনি যে আজ ‘মানবহীন সিস্টেম ‘ এবং ‘ডু ইট ইওরসেল্ফ’-এর ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার কারণে যুদ্ধের অর্থনৈতিক ও মানবিক ব্যয় হ্রাস পাচ্ছে। ফলে প্রযুক্তি যুদ্ধ এবং যুদ্ধক্ষেত্রকে বদলে দিচ্ছে এবং আবারও এর উপর প্রভাব ফেলছে। এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি এও বলেন, ভবিষ্যতের যুদ্ধগুলি চারটি ধারা দ্বারা প্রভাবিত হবে। এই চারটি ধারা হল, যুদ্ধের প্রতিটি ক্ষেত্রে সেন্সর প্রযুক্তির ব্যবহার। এছাড়াও রয়েছে দূরপাল্লার হাইপারসনিক এবং নির্ভুল অস্ত্র। ৩-স্বায়ত্তশাসিত সিস্টেমের সাথে তালমিলিয়ে চলারপ্রক্রিয়া।  আর রয়েছে  এআই, এমএল, এলএলএম এবং কোয়ান্টাম প্রযুক্তি দ্বারা চালিত যুদ্ধক্ষেত্র।
পাকিস্তান সহ বিশ্বের অনেক শক্তিশালী দেশের জেনারেলদের সামনে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রযুক্তির প্রভাব ব্যাখ্যা করে সিডিএস চৌহান বলেন যে আজ প্রতারণামূলক যুদ্ধের যুগ। তিনি বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে ড্রোনের আগমন এমন একটি বিষয় যা যুদ্ধের দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে। এখন আক্রমণগুলি যে কোনও জায়গায়, যে কোনও সময় নির্ভুল ভাবে  চালানো যেতে পারে। মানবহীন এবং স্বায়ত্তশাসিত ব্যবস্থা,  দলবদ্ধকরণ এবং রোবোটিক্সের অগ্রগতির পাশাপাশি, শীঘ্রই যন্ত্র থেকে যন্ত্রের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হবে। ধীরে ধীরে যুদ্ধক্ষেত্র স্বায়ত্তশাসিত হয়ে উঠছে।
সিডিএস অনিল চৌহান এদিন এও মনে করিয়ে দেন, আজকাল যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। এই ক্ষেত্রগুলি হল তথ্য প্রযুক্তি, সাইবার, তড়িৎ চৌম্বকীয় বর্ণালী এবং কগনিটিভ। এই পরিবর্তনগুলির কারণে যুদ্ধের সেই চেন ছবিগুলো ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 + fifteen =