সাম্প্রতিক সময়ে বারবার সংবাদ শিরোনামে উঠে আসছে বিজেপি শাসিত রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বাংলা ভাষায় কথা বলা পরিযায়ী শ্রমিকদের আক্রান্ত হওয়ার খবর । বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলা ভাষায় কথা বললেই ‘বাংলাদেশি’ তকমা দেওয়া হচ্ছে, এমনকি বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অভিযোগ তৃণমূলের। এই নিয়ে আগেই সরব হয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । দলের চেয়ারপার্সন তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভিন্রাজ্যে বাঙালির সেই ‘হেনস্থা’রবিরুদ্ধেআজপথেনামছেন।এদিনপ্রতিবাদমিছিলকরবেনমুখ্যমন্ত্রী।সেই মিছিলে তাঁর সঙ্গী হবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।এই প্রতিবাদ মিছিল কলেজ স্কোয়্যার থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ধর্মতলায়।সেখানে সংক্ষিপ্ত সভা করবেন মমতা ও অভিষেক।
এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, ‘বিভিন্ন সময় মানুষের পাশে দাঁড়াতে আগেও এভাবে সক্রিয় হয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো । এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না । আজকের দিনে বাঙালিদের হেনস্থার প্রতিবাদ করবে গোটা বাংলা । আজ কেন্দ্রীয় মিছিল বাদে জেলায় জেলায় মিছিল হবে দুপুর দুটো থেকে চারটে ।’ তিনি বলেন, ‘বুধবার দুপুর একটায় এই মিছিল সংঘটিত হবে । কলেজ স্ট্রিট থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত যাবে মিছিল । হাওড়া, কলকাতা, সল্টলেক–সহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তৃণমূল কর্মীরা এই মিছিলে যোগ দেবেন ।’
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, মমতা এবং অভিষেক শেষ বার যৌথ ভাবে মিছিলে হেঁটেছেন গত বছর ৭ মার্চ। নারী দিবসের প্রাক্কালে সেই মিছিল হয়েছিল মৌলালি থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত। ১৬ মাস পর ফের একসঙ্গে মিছিলে হাঁটতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এদিনের এই প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারনা, ২০২৬–এর নির্বাচনের আগে বাঙালি অস্মিতায় শান দিতে ময়দানে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। মাতৃভাষাকে অপমানের অভিযোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যআয় এদিনের এই মিছিল।
অন্যদিকে আগামী সোমবার তৃণমূলের বার্ষিক সমাবেশ। তার আগেই এই মিছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। কলকাতার পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতেও আজ মিছিল করবে রাজ্যের শাসকদল। সূত্রের দাবি, এই ইস্যুতে রাজধানী দিল্লিতেও প্রতিবাদের ঢেউ তুলতে চায় জোড়াফুল। প্রসঙ্গত, অসম, ওডিশা, দিল্লি, হরিয়ানা, ছত্তিসগড়, মহারাষ্ট্রও। বিজেপি শাসিত একের পর এক রাজ্য থেকে বাংলাভাষীদের হেনস্থার অভিযোগ আসছ। উঠছে পুলিশি হেনস্থার অভিযোগও। ছত্তিসগড়ে বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য নদিয়ার ন’জন বাসিন্দাকে প্রথমে জেলে পুরে, পরে আবার বাসে তুলে সে রাজ্যের বাইরে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। মহারাষ্ট্রের পুনেতে আবার যে বাঙালিদের হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের কাছে আধার কার্ডের পাশাপাশি সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের পরিচয়পত্রও ছিল। তাতে স্বাক্ষর রয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের। শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলার জন্য যে ভাবে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে পদ্ম–শাসিত রাজ্য থেকে বাঙালিদের হেনস্থা করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঢেউ গোটা দেশে ছড়িয়ে দিতে চায় তৃণমূল।