দেউচা পাচামিতে আদিবাসীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে মমতাঃ শুভেন্দু

দেউচা পাচামিতে আদিবাসীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। মুসলিম তোষণ করতে আদিবাসীদের বঞ্চিত করেছে তৃণমূল। বীরভূমের তারাপীঠে এক সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই দাবি করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই প্রসঙ্গে তিনি এও বলেন, ‘দেউচা পাচামি একটা বড় দুর্নীতি। জেলাশাসক জমি কেনা-বেচা বন্ধ করে দিয়েছে। দেউচায় জমির বিনিময়ে চাকরি হয়নি, চাকরি পাচ্ছে তৃণমূল কর্মীরা। আদিবাসীদের চাকরি দেওয়া হয়নি। পুলিশের সাহায্য়ে তৃণমূল সব করছে। রামনবমীর পর এটা নিয়ে বড় লড়াইয়ে নামবে বিজেপি।’ এরই প্রেক্ষিতে তিনি এদিন এও বলেন, রাম নবমীর পর এই দুর্নীতির প্রতিবাদে জোরদার আন্দোলনে নামবে বিজেপি। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে অরাজনৈতিক আন্দোলনকে কটাক্ষ করে শুভেন্দুবাবু বলেন, আমরা যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম সেটাই শেষ পর্যন্ত সত্যি হল।

এদিন শুভেন্দুবাবু বলেন, দেউচা পাচামিতে আদিবাসী ও সেখানকার অধিবাসীদের সঙ্গে রাজ্য সরকার বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। দেউচা পাচামি নিয়ে রাজ্য সরকার গত ৭ – ৮ বছর ধরে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে। এখান থেকে এত কয়লা উত্তোলিত হবে যে গোটা পশ্চিমবঙ্গ পল্লবিত, সুশোভিত হবে। কিন্তু যে ২২টা ব্লক ধরে রাজ্য সরকার টেন্ডার করেছে তাতে কয়লা উত্তোলনের কোনও কথা নেই। পাথর উত্তোলনের কথা বলা হয়েছে। যেটা তৃণমূলের সব থেকে বড় করে খাওয়ার জায়গা।’

এর পাশাপাশি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এদিন এও বলেন, ‘আমরা আগেই দেউচা পাচামির বাসিন্দা আদিবাসীদের সতর্ক করেছিলাম যে আপনাদের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার প্রতারণা করবে। অনেকে বিশ্বাস করেছেন। অনেকে চাকরির আশায় ওদের ফাঁদে পা-ও দিয়েছেন।’

শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘মোট ১৬৬২ জনের চাকরি হয়েছে। তার মধ্যে গ্রুপ ডিতে ২৭৮, আর বাকি ১,৩৮৪ হচ্ছে জুনিয়র কনস্টেবল। এর মধ্যে কয়েকশ একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের থেকে। অর্থাৎ, তোষণের রাজনীতি। এর ফলে আদিবাসীরা চাকরি পাননি। কয়েকদিন আগে জেলাশাসক বলেছেন এটা অস্থায়ী চাকরি। ১০ হাজার টাকার চাকরি। ৬ মাস অন্তর রিনিউ হবে এই চাকরিটা। এটা আগে আমরা বলেছি। তিন বছর ধরে বলছি।’

এর পর সরাসরি চাকরিতে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন শুভেন্দুবাবু। তিনি বলেন, ‘সামিমুল ইসলাম নামে একজন রাজ্যসভার সদস্য আছেন। তিনি ২৬ জনকে চাকরি দিয়েছেন যাদের জমি নেই। তাতে তাঁর আত্মীয়স্বজনরাও আছেন। তার মধ্যে তাঁর দাদার শ্যালক, ভাইপো সবাই রয়েছে। এটা আরেকটা নিয়োগ দুর্নীতি।’

এখানেই শেষ নয়, জমির মালিকানা বদলের মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ করেন শুভেন্দুবাবু। তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর বীরভূমের জেলাশাসক দেউচা – পাচামিতে জমি কেনা বেচা বন্ধ বলে ঘোষণা করেন। তার পরেও বিশেষ প্রভাব খাটিয়ে জমি বিক্রি হয়েছে। ৫৩ জন জমি কিনে চাকরি পেয়েছেন।’

এমনকী দেউচা – পাচামিতে জমিহারাদের পাট্টা দেওয়ার নামেও তোষণের রাজনীতি হয়েছে বলে দাবি করেন শুভেন্দুবাবু। তিনি বলেন, ‘বিএলআরও অফিস বীরভূম না কি পাট্টার খাতা হারিয়ে ফেলেছেন। এফআইআর দায়ের করার অর্ডার শিট হল। তার পর হাসিনা বিবি, সামাদ শেখদের একের পর এক পাট্টা দেওয়া হল। এদের কেউ এখানকার বাসিন্দা নন। অনেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা। তার মানে এরাও ভবিষ্যতে চাকরি চাইবে। আদিবাসীদের দখলে থাকা জমিতে নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে পাট্টা দেওয়া হয়েছে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 + 10 =