‘বিরোধী দল আপনারা আগে বলে নিন। কিন্তু বলার পরে পালালে হবে না। আমার কথা শুনতে হবে’৷ বিধানসভা অধিবেশনে বার বার বিরোধীদের ওয়াক আউট এবং বিক্ষোভ করে অধিবেশনের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি প্রসঙ্গে বুধবার বাজেট অধিবেশনের তৃতীয় দিনে সরাসরি বিরোধীদের এমন কথাই বলতে শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর মুখে।
এদিন অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তৃতা করতে শুরু করলেই বিজেপি বেঞ্চ থেকে তুমুল বিক্ষোভ-বিরোধিতা আসতে শুরু করে। তখনই মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বিরোধী দল আপনারা আগে বলে নিন। কিন্তু বলার পরে পালালে হবে না। আমার কথা শুনতে হবে।’ প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারও অধিবেশনের মাঝে ওয়াকআউট করেছিলেন বিজেপি বিধায়কেরা। কাগজ ছিঁড়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল অধিবেশন কক্ষে। বুধবার সেই প্রসঙ্গই উঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীর গলায়।এরপর মমতা বলেন,‘ছিঁড়ুন ছিঁড়ুন ভালো করে ছিঁড়ুন৷ এটা প্রথম থেকে প্ল্যান করে কাঁচি নিয়ে ছিঁড়ে এনেছিল।’
এদিকে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ ফের তাঁর বক্তব্যে বিরোধী থাকাকালীন তৃণমূলের বিধানসভা ভাঙচুরের প্রসঙ্গ তোলেন। এমনকি, গোটা ঘটনার পিছনে অভিযোগের আঙুল তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেও। সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য বিজেপি বিধায়ককে তাঁর ‘ভাষা সংযত’ করার আবেদন জানান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বিজেপির মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষের অভিযোগের উত্তরও দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ জোর গলায় বলেন, ‘আবার জানাই আমি কোনও চেয়ার ভাঙিনি। প্রমাণ করতে পারলে পদত্যাগ করে চলে যাব। আমি বিরোধী দলে আছি মানে হাউজ ভাঙচুর, সরকারি কাগজ ছেঁড়া এটা কাজ নয়।’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিধানসভায় একটি বিষয় নিয়ে মুলতবি প্রস্তাব এনেছিলেন বিজেপি বিধায়কেরা। সেই প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ায় তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন৷ হাতে থাকা কাগজ ছিঁড়ে ছড়িয়ে দেন তাঁরা। এরপরেই ক্ষুব্ধ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়ার ছেড়ে উঠে বলতে শোনা যায়, ‘এই ভাবে প্রতিদিন ডিস্টার্ব করা যায় না। আপনারা আসনে বসুন। অধিবেশন চলছে।’ এরপর বুধবার বিধানসভা কক্ষে বিরোধীদের সংয়ত থাকার এক স্পষ্ট বার্তা দিতে শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে।