শান্ত হচ্ছে মণিপুর, জানালেন প্রধানমন্ত্রী মোদি

মণিপুরে মা- বেটিদের উপর অত্যাচার চলছে। মঙ্গলবার ৭৭-তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনটাই মন্তব্য করলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ‌ে পতাকা উত্তোলন করতে দিল্লির লালকেল্লায় পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই তাঁর মুখে উঠে আসে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুরের প্রসঙ্গ। তবে মণিপুরে বর্তমানে শান্তি ফিরছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। এদিন মণিপুর প্রসঙ্গে মোদি জানান, ‘মণিপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, তা দুঃখজনক। মণিপুরে মা-বেটিদের উপর অত্যাচার চলছে। তবে এখনে সেখানে ধীরে ধীরে শান্তি ফিরেছে। গোটা দেশ মণিপুরের সঙ্গে আছে। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার মিলে সেই শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করবে। শান্তির মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।’

উল্লেখ্য, মণিপুর ইস্যুতে প্রথমদিন থেকেই ঝড় উঠেছিল সংসদের বাদল অধিবেশন। বাদল অধিবেশনের শুরুতেই অনাস্থা প্রস্তাবের জবাবি ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্য এবং কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরীর সাসপেনশন নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে লোকসভা। মণিপুর প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে রাহুল বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি মণিপুর গিয়েছিলাম। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী এখনও পর্যন্ত সেখানে যাওয়ার সময় পাননি। আপনারা মণিপুরের মানুষকে হত্যা করে দেশকে হত্যা করেছেন। কারণ মণিপুর যে দেশের একটা অংশ তা মনেই করেন না প্রধানমন্ত্রী। আপনারা দেশদ্রোহী। মণিপুরে দেশকে হত্যা করা হয়েছে। আপনারা ভারতমাতার রক্ষক নন, আপনারা ভারতমাতার ঘাতক।’

এদিকে  মণিপুর হিংসা বেড়ে ওঠার পিছনে যে বিরোধীদের ভূমিকা রয়েছে, তা নিয়েও তোপ দাগেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, মণিপুরবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। সেই মণিপুর প্রসঙ্গ ফিরল স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে। এদিন ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মেনে নে, মণিপুরের মহিলাদের উপর অত্যাচার হয়েছে। তবে ধীরে ধীরে সেই রাজ্য শান্তিও ফিরছে বলে জানান তিনি।

এদিন মহিলাদের ক্ষমতায়নের কথা উঠে এল মোদির মুখে। দেশজুড়ে ২ লক্ষ মহিলাকে লাখপতি করার জন্য ‘লাখপতি দিদি’ প্রকল্পের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে মহিলাদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের কথাও জানান তিনি। নারীশক্তির নেতৃত্বেই ভারত এগিয়ে যাবে বলে আত্মবিশ্বাসী প্রধানমন্ত্রী। যেকোনও মূল্যেই ভারতের অখণ্ডতা রক্ষা করতে হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এরই রেশ ধরে মোদি এও জানান, বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মহিলা পাইলট রয়েছে ভারতে। বিমানবাহিনী থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে মহিলাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। একটি অঙ্গ দুর্বল হলে পুরো শরীর দুর্বল হয়। তাই সমাজের সমস্ত স্তরকে উন্নীত করা চেষ্টা করা হচ্ছে। ভারত গণতন্ত্রের জননী এবং বিবিধ বৈচিত্র্যের অধিকারী। দেশের যে কোনও জায়গায় কোনও ঘটনা ঘটলে ভারতের অন্য জায়গায় তার প্রভাব পড়ে। এমনকি বিশ্বের কোথাও কোনও ঘটনা ঘটলে সেই সমস্যা অনুভব করে ভারত।

মোদি এদিন এও জানান, কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তি নিয়ে আসা হচ্ছে। মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ড্রোন দেবে ভারত সরকার। কৃষিকাজে ড্রোনের সাহায্য নিলে উন্নতি ঘটবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের আপাততত ১৫ হাজার ড্রোন দেবে ভারত সরকার।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × 4 =