বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতিতে সেখানকার বাসিন্দাদের একটা অংশ ভারতে আসার চেষ্টা করবেন, এমন সম্ভাবনার কথা নিয়েই জল্পনা চলছিল। বিশেষত কাঁটাতারহীন সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা হবে, এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন কেউ কেউ। আর এই জল্পনা যে অমূলক নয়, তা দেখা গেল শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর দু’দিন কাটতে না কাটতেই। পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তে নজরে আসছে কয়েক হাজার বাংলাদেশির ভিড়। যেখানে যে কোনও মূল্যে বাংলাদেশ ছাড়তে চান তাঁরা। বাংলাদেশ থেকে আসা লোকজন বলছেন, ‘অত্যাচারের জন্য পালিয়ে এসেছি। বিএসএফের গুলি খেয়ে মরব তাও ভাল, তবু বাংলাদেশে থাকব না।’ তাঁদের একটাই বক্তব্য, ‘যে কোনও মূল্যে ভারতে প্রবেশ করতে দেওয়া হোক।’ মানিকগঞ্জের মানুষজনও সীমান্তে অপেক্ষারত মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেছেন।
এমনই ছবি ধরা পড়েছে জলপাইগুড়ির মানিকগঞ্জের সাতকুড়ায়। বুধবার দুপুর থেকে ওই এলাকার সীমান্তে নজরে আসে কাতারে কাতারে মানুষ অপেক্ষা করছেন, যদি তাঁদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। ওই অংশে কাঁটাতার নেই বলেই জানা গিয়েছে। কেউ বৃদ্ধ মা, কেউ কোলের সন্তানকে নিয়ে অপেক্ষা করছেন সেখানে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বিএসএফ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও অনুপ্রবেশের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির খবর ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই ভিটেমাটি ছেড়ে চলে আসছেন। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু অর্থাৎ হিন্দুদের ওপর অত্যাচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
পরিস্থিতি এমন থাকলে বিএসএফ কী পদক্ষেপ করবে, কীভাবে আটকাবে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন সেনা কর্তারা জানাচ্ছেন, ‘সীমান্ত পার না করলে বিএসএফ কিছু করতে পারবে না। তবে পরিস্থিতি এমন থাকলে, বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। তাতেও যদি অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলতে থাকে, তাহলে ফায়ারিং করতে বাধ্য হবে বিএসএফ।’