মঙ্গলবার দলের নতুন রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করার পর দলবদলের জল্পনায় জল ঢেলেছিলেন তিনি। আবার বুধবার দিল্লিতে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে ফেরার পর এক বিস্ফোরক তথ্য দিতে শোনা গেল তাঁকে। দিলীপ ঘোষ এদিন জানান, দলেরই কিছু লোক তাঁকে দলছাড়া করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি লড়ে গিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে দিঘায় আমন্ত্রণ জানানোয়, কিছু লোকের অস্বস্তি হচ্ছিল বলেও জানান দিলীপ।
দিল্লিতে শিবপ্রকাশের সঙ্গে বৈঠক সেরে স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারকে পাশে নিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। শিবপ্রকাশ সম্পর্কে দিলীপ জানান, ওঁর অভিজ্ঞতা আছে বাংলা সম্পর্কে। তাই পশ্চিমবঙ্গের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাঁর দাবি, এবার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি যে আসন গতবার পেয়েছে তার থেকে আরও। ১০০ আসন বেশি লাগবে।আর এবার সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়াও হচ্ছে।
এরপরই প্রশ্ন করা হয়, এবার নতুন করে কোনও দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হচ্ছে কি না সে ব্যাপারেও। সঙ্গে খুব স্বাভাবিক ভাবে এ প্রশ্নও ওঠে, ফের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পাবেন কি না তা নিয়েও। এই প্রশ্নের উত্তরে প্রাক্তন সাংসদ জানান, এখনও পর্যন্ত কোনও বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তৈরি হবে কেন্দ্রীয় কমিটি, তারপর ঠিক হবে। তবে বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট পাবেন কি না তার উত্তরে তিনি জানান, ‘দেখি পার্টি কীভাবে চায়। আমি তো বিধানসভায় আগে ক্যান্ডিডেট হয়েছি, লোকসভাতেও হয়েছি। পার্টির প্রয়োজনে যেটা দরকার সেটা করব।’ অর্থাত্, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে জল্পনা জিইয়ে রাখলেন দিলীপ ঘোষ।
আর সেখানেই একের পর এক বোমা ফাটান তিনি। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে মান–অভিমান চলছে কিনা জানতে চাওয়া হলে দিলীপ বলেন, ‘এক বছর হল দল কোনও দায়িত্ব দেয়নি। ২০২৪ পর্যন্ত তো আমি কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ছিলাম। তার পর নির্বাচন হল। আবার বাংলায় নির্বাচন আসছে। দল মনে করলে যা দায়িত্ব দেবে, করব।‘
তবে এটা ঠিক যে, ২১ জুলাই বিশেষ কিছু ঘটবে বলে এর আগে জল্পনা উস্কে দিয়েছিলেন দিলীপ। তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে তাঁকে দেখা যাবে কিনা, সেই নিয়ে বিস্তর চর্চা চলছিল। কিন্তু পরবর্তীতে শমীক জানিয়ে দেন, ক্ষণিকের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল ঠিই তবে কেউ দল থেকে বেরিয়ে গিয়েছে এমনটা ভাবা ঠিক নয়। দিলীপও বলেন, ‘উনি সবাইকে নিয়ে কাজ করতে বলেছেন। উনি রাজ্য সভাপতি। উনি যেটা ঠিক করবেন, সবাই মেনে নেবেন। ওঁর কথায় অনেকে উৎসাহিত। পুরনো কর্মীরা আবার মনে জোর পাচ্ছেন।‘
তবে এর মধ্যেও ঠারেঠোরে নিজের যন্ত্রণার কথা বুঝিয়ে দিলেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘আগের অনেক ঘটনা রয়েছে। দলের মিটিংয়ে আমাকে চেয়ারই দেওয়া হত না। আমি তো কাজ করে গিয়েছি। দল ছেড়ে চলে যাইনি তো। যারা আমাকে পার্টি ছাড়াতে চেয়েছিল, তারা খুব চেষ্টা করেছিল। দিলীপ ঘোষ কখনও দল ছাড়বে বলেনি। যে পার্টি দাঁড় করিয়েছে, সে দল ছাড়বে কেন? পার্টি ছাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে লড়ে যাবে।‘