বেআইনি হোর্ডিংয়ের ব্য়বসা রুখতে এবার বসছে কিউআর কোড, জানালেন মেয়র ফিরহাদ

বছরের পর বছর শহর জুড়ে চলছে বেআইনি হোর্ডিং-এর ব্যবসা। আর এই ব্যবসা চলছে পুরসভার অনুমতি ছাড়াই। আর এই বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং ভাড়া দিয়ে কোটি কোটি টাকা রোজগার করছে কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা। যার জেরে গত চার বছরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার উপর রাজস্ব হাতছাড়া হয়েছে পুরসভার। সেই অনিয়ম রুখতে এবার হোর্ডিংয়েও কিউআর কোড লাগানোর সিদ্ধান্ত নিল পুর কর্তৃপক্ষ। এই প্রসঙ্গে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, এবার থেকে কলকাতা পুরসভার অনুমোদিত প্রতিটি হোর্ডিংয়ে কিউআর কোড লাগানো থাকবে। আর যেখানে থাকবে না সেটা বেআইনি হোর্ডিং হিসেবে ধরা হবে। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুরসভা। কলকাতা শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বিজ্ঞাপনী প্রচারের জন্য পুরসভার কাছ থেকে হোর্ডিং ভাড়া নিয়ে থাকে অ্যাড এজেন্সিগুলি। নিয়ম অনুযায়ী, টেন্ডার ডেকে এই বরাত দেওয়ার কথা। টেন্ডার ডেকে বরাত দেওয়ার এই প্রক্রিয়া থমকে দাঁড়ানোর জেরে বিনা টেন্ডারেই চলছে পুরসভার হোর্ডিং ব্যবহার। আর সেখান থেকেই রোজগার হচ্ছে কোটি কোটি টাকাও। এতে বিপুল টাকার রাজস্ব হাতছাড়া হয়েছে পুরসভার। কলকাতা পুরসভার অর্থ বিভাগের এক আধিকারিক জানান, প্রতি বছর হোর্ডিং থেকে কম করে ১০০-১৫০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হওয়ার কথা। এই হিসেব অনুসারেগত চার-পাঁচবছরে প্রায় ৩৫০-৪০০ কোটি টাকার রাজস্ব লোকসান হয়েছে পুরসভার।

এদিকে পুরসভা সূত্রে খবর, হোর্ডিং ভাড়া দেওয়ার জন্য ২০২০ সালে একবার ই-টেন্ডার করা হয়েছিল। তাতে বেশ কয়েকটি সংস্থা দরপত্র জমা দেয়। যদিও করোনার ধাক্কায় পরবর্তীকালে তারা পিছিয়ে যায়। ২০২১, ২০২২ এবং ২০২৩ সালের শুরুর দিকে নতুন করে টেন্ডার ডাকা হলেও কোনও সংস্থা তাতে আগ্রহ দেখায়নি। পুর আধিকারিকদের দাবি, করোনার পর থেকেই ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে। সেই কারণে অনেক কর্পোরেট সংস্থার বিজ্ঞাপনের বাজেট কমেছে। তার উপর পুরসভা হোর্ডিংয়ের ফি অত্যধিক বাড়িয়ে দেওয়ায় এজেন্সিগুলি টেন্ডারে অংশ নিতে রাজি হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই পুরসভাকে হোর্ডিংয়ের রেট কমাতে হয়েছে। কিছুদিন আগেই আবার নতুন করে টেন্ডার ডেকেছে পুরসভা। তাতে মোট দু’টি এজেন্সি দরপত্র জমা দিয়েছে।

এদিকে সরকারি নিয়ম হল, টেন্ডারে কম করে তিনটি সংস্থাকে অংশগ্রহন করতে হবে। নইলে আবার নতুন করে টেন্ডার করতে হবে। সেজন্য রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের কাছ থেকে বিশেষ অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। কলকাতা শহরে পুরসভার ২৬০টি স্ট্রিট হোর্ডিং রয়েছে। এছাড়াও রাজ্য সরকারের প্রায় ১২০টি’র মতো হোর্ডিং ছিল। কিছুদিন হল, সেগুলির ম্যানেজমেন্ট কন্ট্রোল হাতে নিয়েছে পুরসভা। সেই সব হোর্ডিংয়েরও টেন্ডার করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × three =