কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে শহরের বায়ু দূষণ নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই অস্বস্তিতে পরিবেশ বিভাগের মেয়র পারিষদ সদস্য স্বপন সমাদ্দার। যে প্রশ্নটি বিশ্বরূপ দে আদতে তোলেন এই অধিবেশনে তার উত্তর না দিয়ে কলকাতায় কত জলভূমি বোঝানো রুখেছেন, কী কী বৈঠক করেছেন এই ধরনের একাধিক বিষয়ে সাফাই দিতে থাকেন।
এরপরই এই প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন বিশ্বরূপ দে একেবারে নিজের টেবিলে উঠে পড়েন। স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যে বিষয়টি নিয়ে উত্তর চাওয়া হয়েছে, সেটা শুধু জানতে চাইছি। একইসঙ্গে এ প্রশ্নও করেন, বিশ্বের বায়ু দূষণের ইনডেক্সে কলকাতা স্থান পেয়েছে। পাশাপাশি সংযোজন, কলকাতা পৌরসভা বায়ু দূষণ রুখতে ব্যর্থ হচ্ছে কি না তা নিয়েও। খোদ দলের কাউন্সিলরের এমন বক্তব্যে রীতিমতো বিড়ম্বনায় পরিবেশ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পরিষদ। থামিয়ে দেন নিজের বক্তব্য।
এদিকে স্বপন সমাদ্দার যে অস্বস্তিতে পড়েছেন তা টের পেয়েই উঠে পড়েন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। উঠে গিয়ে নিজের বক্তব্য রাখতে শুরু করেন। দেন একের পর এক সাফাই। যদিও সেসব খুব একটা কানে তুলতে দেখা যায়নি বিশ্বরূপ দে-কে। পাল্টা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। কলকাতাকে কি দূষণের ইনডেক্সের বাইরে আনা যাবে না তাও জানতে চান বিশ্বরূপ। সঙ্গে প্রশ্ন, কেন কলকাতার অবস্থায় এই ধরনের হবে তা নিয়েও। কিন্তু, ফিরহাদ ততক্ষণে বক্তব্যের মোড় অন্যদিকে ঘোরাতে শুরু করেছেন।
যদিও বিতর্কের আবহে নিজের বক্তব্যেই অনড় বিশ্বরূপ। তাঁর স্পষ্ট কথা, আমি মানুষের দ্বারা নির্বাচিত। তাই মানুষ যা মনে করে আমি সেই কথাই তুলে ধরি।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, যে পুরসভা শহরের বায়ু দূষণ নিয়ে প্রতি ক্ষেত্রে নিজেদের ক্লিনচিট দিয়ে থাকে, এই ক্ষমতাশীল দলেরই একজন কাউন্সিলরের প্রশ্নে শাসকদলের ট্রেজারি বেঞ্চ যে অস্বস্তিতে পড়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কেউ কেউ মুখে হাত দিয়ে হাসতেও থাকেন বিশ্বরূপ দে’র প্রশ্নে। তাঁর দলেরই কেউ কেউ বলছেন, একদম ঠিক প্রশ্ন ঠিক জায়গায় করেছেন বিশ্বরূপ। তাতেই অস্বস্তিতে পড়েছে পুরসভা। কারণ যে ধরনের আশ্বাস মুখে দেওয়া হয় তার কোনও বাস্তব প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায় না। যদিও খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, দলেরই কাউন্সিলরের একের পর এক প্রশ্নবাণে পরিবেশ বিভাগের আসল কঙ্কালসার চেহারাটাই প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে।