ডিম না চিকেন, বাঙালির এই দুই প্রিয় খাবারের মধ্যে কোনটা হজম করা সহজ তা নিয়ে জল্পনার শেষ নেই। এব্যাপারে পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, আমাদের অতি প্রিয় ডিমে রয়েছে ফসফরাস, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, কপার, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম এবং জিঙ্কের মতো উপাদান। আর এই সমস্ত ভিটামিন ও খনিজ কিন্তু শরীরের হাল ফেরানোর কাজে সিদ্ধহস্ত। শুধু তাই নয়, এতে মজুত প্রোটিন কিন্তু দেহে এই ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টের ঘাটতি মিটিয়ে ফেলার ক্ষমতা রাখে।
আর চিকেন হল প্রোটিনের ভাণ্ডার। চিকেনের প্রোটিন খুব সহজেই শরীর গ্রহণ করে নেয়। শুধু তাই নয়, এতে মজুত রয়েছে ভিটামিন বি-১২, ট্রিপটোফ্যান, কোলিন, জিঙ্ক, আয়রন, কপার থেকে শুরু করে একাধিক উপাদান। আর এই সমস্ত উপাদান কিন্তু দেহে পুষ্টির ঘাটতি মিটিয়ে ফেলার ক্ষমতা রাখে। তাই নিয়মিত চিকেন খেলে পোক্ত হয় হাড়। বাড়ে পেশির জোর। সেই সঙ্গে হার্টের স্বাস্থ্যের হাল ফেরানো, ওজন কমানো সহ একাধিক কাজে সাহায্য করে চিকেন। তাই সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে চাইলে নিয়মিত চিকেন খেতেই হবে। তাতেই উপকার পাবেন হাতেনাতে।
তবে এই দুই খাবারই অত্যন্ত পুষ্টিকর। তাই এই দুই খাবারই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাওয়া উচিত। তবে পেটের দিক দিয়ে চিন্তা করলে, চিকেনের থেকে ডিম হজম করা সহজ। এমনকী চিকেনের থেকে ডিমের প্রোটিনের মানও অত্যন্ত ভালো। তাই এদিক থেকে বিচার করলে এই যুদ্ধে ডিমকেই এগিয়ে রাখতে হবে।
তবে সমস্যা হল অন্য জায়গায়। আমাদের মধ্যে অনেকেই চিকেন রান্নার সময় প্রচুর তেল, মশলা ব্যবহার করেন। আর এই ভুলটা করেন বলেই মুরগির মাংস খেয়ে তেমন একটা উপকার মেলে না। উল্টে শরীরের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাই বাড়ে। এমনকী এই কারণে পিছু নিতে পারে একাধিক পেটের সমস্যা। তাই এমন সমস্যা থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে তেল, মশলা সমৃদ্ধ চিকেন খাবেন না। তার বদলে এই প্রাণীজ খাবারের পদ হালকা করে রাঁধুন। পারলে চিকেন স্টু বা চিকেন স্যালাড খান। তাতেই উপকার মিলবে হাতেনাতে।
ঠিক একইভাবে ডিম ভাজা বা ডিমের পোচও খাবেন না। তার বদলে ডিম সিদ্ধ করে নিয়মিত রসনাতৃপ্তি করুন। আর কোনও সুস্থ মানুষ চাইলে প্রতিদিন একটা গোটা ডিম খেতেই পারেন। তবে এর বেশি নয়। আর অপরদিকে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম চিকেন অনায়াসে খাওয়া যায়। তবে ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল, কিডনি ডিজিজ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডায়েট ঠিক করুন।