স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়িকে খুন করে ৯ মাসের শিশুকে নিয়ে আত্মসমর্পণ মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারের

স্ত্রী এবং শ্বশুর-শাশুড়িকে খুন করে ৯ মাসের শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করলেন ২৫ বছরের তরুণ নাজিবুর রহমান বোরা। ঘটনাস্থল অসমের গোলাঘাট জেলা।

পুলিশ সূত্রে খবর, ২৫ বছরের নাজিবুর এবং ২৪ বছর বয়সি সংঘমিত্রার প্রেমপর্বের সূত্রপাত লকডাউন আবহে। ২০২০ সালের জুন মাসে দেশ জুড়ে অতিমারির লকডাউনে বন্ধুত্ব শুরু নাজিবুর এবং সংঘমিত্রার। ফেসবুকের বন্ধুত্ব প্রেমে পরিণত হতে সময় বেশি লাগেনি। অভিযোগ, সে বছর অক্টোবর মাসে দুজনে কলকাতায় পালিয়েও যান। অবশ্য তার আগেই কলকাতায় তাঁরা রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করেন বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেন নাজিবুর। এদিকে বিয়ের দু’ বছর পর মেয়ের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ আনেন সংঘমিত্রার বাবা মা। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতারও করা হয় সংঘমিত্রাকে। এরপর এক মাসেরও বেশি সময় তাঁকে জেল হেফাজতে রাখা হয়। তবে জামিন পাওয়ার পর নিজের বাবা মায়ের কাছে ফিরে যান সংঘমিত্রা, এমনটাই খবর পুলিশ সূত্রে।

এরপর ২০২২ সালের জানুয়ারিতে নাজিবুর ও সংঘমিত্রা ফের পালিয়ে যান। এ বার তাঁরা চেন্নাইয়ে গিয়ে থাকতে শুরু করেন। সেখানে তাঁরা পাঁচমাস একসঙ্গে ছিলেনও।  সে বছরের অগাস্টে এই দম্পতি যখন অসমের গোলাঘাটে ফিরে যান, তখন সংঘমিত্রা অন্তঃসত্ত্বা৷ তাঁরা নাজিবুরের বাড়িতেই থাকতে শুরু করেন।  ২০২২-এর নভেম্বরে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন সংঘমিত্রা।

চলতি বছরের মার্চ মাসে নাজিবুরের বাড়ি ছেড়ে শিশুসন্তানকে নিয়ে আবার বাবা মায়ের কাছে ফিরে যান সংঘমিত্রা। একইসঙ্গে নাজিবুরের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে পুলিশের দ্বারস্থও হন। স্ত্রীকে  খুনের চেষ্টার দায়ে গ্রেফতার করা হয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার নাজিবুরকে। এরপর গত ২৮ এপ্রিল জেল থেকে মু্ক্তির পর নাজিবুর চেয়েছিলেন তাঁর সন্তানকে দেখতে৷ কিন্তু অভিযোগ, সংঘমিত্রার বাবা মা তাঁকে সে সুযোগ দেননি। এরপরই, ২৯ এপ্রিল নাজিবুরের ভাই এই মর্মে পুলিশের কাছে অভিযোগও দায়ের করেন। তাতে সংঘমিত্রার বাবা মায়ের বিরুদ্ধে নাজিবুরকে অপমান করার অভিযোগ আনা হয়। ঘটনার টানাপড়েন ঘিরে সোমবার বিকেলে দু’ পক্ষের মধ্যে তরজা তুঙ্গে ওঠে। পুলিশের কাছে নাজিবুর স্বীকার করেছেন যে, তিনি রাগের মাথায় স্ত্রী সংঘমিত্রা এবং তাঁর বাবা মাকে খুন করেছেন। এরপর ৯ মাসের শিশুপুত্রকে নিয়ে পালিয়ে যান ঘটনাস্থল ছেড়ে। পরে অবশ্য পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণও করেন। সূত্রে খবর, পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। শুরু হয়েছে নমুনা সংগ্রহের কাজও।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen + five =