কলকাতা পুলিশ কমিশনারের কাছে পুরুষ পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ মীনাক্ষীর

গত ৯ই অগাস্ট ২০২৪ তারিখে আর জি কর মেডিকেল কলেজে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে আর জি কর হাসপাতালের সামনে সেদিনই প্রতিবাদে বসেছিলেন সিপিএম যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। এরই মাঝে সন্ধ্যা ৭:৩০ নাগাদ আরজি কি কর হাসপাতালের মর্গ থেকে পুলিস মৃতদেহ নিয়ে তড়িঘড়ি বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সেই মৃতদেহ আটকে নিহতের পবিবারের লোকের সঙ্গে কথা বলতে চান মীনাক্ষী। একইসঙ্গে জানতে চান যে পুলিশের কেউ তাদের উপর প্রশাসনিক প্রভাব খাটাবার চেষ্টা করছে কিনা। বামযুবনেত্রীর দাবি, সেই সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষার নামে পুরুষ পুলিশই বিনা প্ররোচনায় সচেতনভাবে ও ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁর বুকে ধাক্কা মারে, সজোরে ঘুষি চালায় বেশ কয়েকবার, মহিলা পুলিশ ছাড়াই বহু সংখ্যক পুরুষ পুলিশ তাঁকে ধাক্কা দেয় ও মারে। এই ঘটনারই প্রেক্ষিতে সেদিনের ওই সব পুলিশের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত করে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে বুধবার পুলিস কমিশনারকে চিঠি লেখেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।

মীনাক্ষী যে চিঠি কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েলকে পাঠিয়েছে তাতে তিনি লিথেছেন, কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে লেখা চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘আমি মীনাক্ষী মুখার্জি, ভারতর গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক, আমার ঠিকানা ৭৯/৩এ আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড, কলকাতা – ৭০০০১৪। আমি এই মর্মে জানাইতেছি যে গত ৯ই অগাষ্ট ২০২৪ তারিখে আর জি কর মেডিকেল কলেজে যে নৃশংস ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটে তার প্রতিবাদে আর জি কর হাসপাতালের সামনে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছিলাম। এমত অবস্থায়, আমরা জানতে পারি যে নিহতের পরিবারের লোকেরা পুলিশের ব্যবহারে অসন্তুষ্ট হয়েছেন এবং পুলিশ তাদের উপর প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে তদন্তকে প্রভাবিত করছে যা নিরপেক্ষ তদন্তের পরিপন্থী। এরপর সন্ধ্যা ৭:৩০ নাগাদ আরজি কি কর হাসপাতালের মর্গ থেকে পুলিশ মৃতদেহ নিয়ে তড়িঘড়ি বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমরা পুলিশকে জানাই যে নিহতের পবিবারের লোকের সাথে আমরা কথা বলতে চাই এবং জানতে চাই যে পুলিশের কেউ তাদের উপর প্রশাসনিক প্রভাব খাটাবার চেষ্টা করছে কিনা। নিরপেক্ষ তদন্ত সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এই ধরণের কোনো প্রকার প্রভাব মুক্ত রাখা জরুরি। এইসময় উপস্থিত পুলিশের একাংশ অভিষেক গুপ্তার নেতৃত্ব কোনোরকম মহিলা পুলিশের অনুপস্থিতিতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার নামে বিনা প্ররোচনায় সচেতনভাবে ও ইচ্ছাকৃতভাবে আমার বুকে ধাক্কা মারে, কয়েকটি সজোরে ঘুষি চালায়, মহিলা পুলিশ ছাড়াই বহু সংখ্যক পুরুষ পুলিশ আমাদের ধাক্কা দেয়, মারে।’

এর পাশাপাশি তিনি ওই চিঠিতে এও লেখেন, ‘সাধারন মানুষের দাবি মেনে আমি এবং আমার সাথী বন্ধুরা নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবং নিহতের পরিবারকে সুষ্ঠ বিচার পাইয়ে দেবার আশায় প্রতিবাদ কর্মসূচির মধ্যে এই ঘটনার ফলস্বরূপ তীব্র ব্যাথা ও যন্ত্রণা উপলব্ধি করলেও শুরুতে গুরুত্ব না দিয়ে পরবর্তী সময়ে প্রতিবাদ যখন আরোও জোরালো হয়ে ওঠে তখন অপরাধী পুলিশরা রাস্তায় প্রতিবাদ করার কারণে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এবং বারেবারে অবস্থানরত সমব্যথী আন্দোলনকারীদের প্রতিবাদ কর্মসূচিকে ছত্রভঙ্গ করার ছলনায় হাত ধরে টানাটানি করতে থাকে।পুলিশ আন্দোলনকারীদের পাশবিকভাবে শারীরিক ও মানসিক ভাবে অত্যাচার করার পর  নিহতের শবদেহ নিয়ে বেরিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় উপস্থিত সকল অপরাধী পুলিশের বিরুদ্ধে এফআইআর পূর্বক তদন্ত করে কঠোর শাস্তি সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আর্জি জানাই যাতে সাধারণ মহিলাদের পুলিশের প্রতি আস্থা ফিরবে ও আমরা আপনার নিকট বাধিত থাকিব।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − 7 =